‘হ্যাঁ আমার ব্যাগে বোমা আছে, সেটার নাম সংবিধান’: বইমেলা থেকেই বার্তা মোদী-শাহকে

0
165

কলকাতা: সাহিত্যপ্রেমী পাঠকদের ভিড়ে ৪৪তম কলকাতা বইমেলায় চলছে বাঙালি তথা কলকাতাবাসীর বই উৎসবের আনন্দ। সপ্তাহজুড়ে অনুষ্ঠান, টলিতারকা, ভিন্ন শিল্পীদের ভিড়ে সেজে উঠেছে বইমেলার প্রাঙ্গণ। সাহিত্যপ্রেমী বাঙালিদের বইয়ের প্রতি আকর্ষণ নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। তবে যেখানেই সাহিত্য উঠে আসে সেখানেই আসে সমাজব্যবস্থা। সাহিত্যকে প্রতিবাদের ভাষা হতে আমরা বারবার দেখেছি।

ঠিক এরকমই দৃষ্টান্ত দেখা গেল ৬ ফেব্রুয়ারি মেলা প্রাঙ্গণে। একাধারে পাঠকদের বই কেনা এবং ভুরিভোজের মাঝেই ময়দানে নেমেছেন সাধারণ আন্দোলনকারীরা। মোদী-শাহ এর এনপিআর, এনআরসি, সিএএ-র বিরুদ্ধে ব্যানার হাতে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। মোদী সরকারের এই এনপিআর, এনআরসি, সিএএ এর বিরোধীতায় মেলা প্রাঙ্গণে রব উঠেছে ‘ হ্যাঁ আমার ব্যাগে বোম আছে, আর সে বোমের নাম সংবিধান’।

- Advertisement -

কোনও রাজনীতির রঙেই নিজেদের পরিচয় দেননি আন্দোলনকারীরা, তাঁরা শুধুমাত্রই দেশের মানুষ। তাঁদের দাবি ‘বাংলার মাটিতে এনআরসি চাই না’। ‘নো এনআরসি’ র ব্যানার হাতে তীব্র প্রতিবাদে সাধারণ নাগরিক। মানুষকে ঘর ছাড়া করে দেওয়ার এই আইন বাংলার মাটিতে লাগু করা চলবে না। গোটা দেশজুড়ে এনআরসি, সিএএ, এনপিআর নিয়ে বিদ্রোহে নেমেছে বেশ কিছু রাজ্য, বেশ কিছু স্তরের মানুষ, এমনকি বেশ কিছু রাজনৈতিক দলও এই নিয়ে স্পষ্ট আপত্তি জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ণ আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন বাংলার মানুষকে কোনও শরণার্থী ক্যাম্পের স্মরণাপন্ন হতে হবে না। বিজেপি সরকার দেশজুড়ে এই আইন লাগু নিয়ে তৎপর, চালু করা হয়েছে মিসড কল দিয়ে এই আইনের সমর্থন জানানোর প্রক্রিয়া। ছাত্রছাত্রীরা রাজপথে নেমেও প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে এই আইনের বিরুদ্ধে। তারকারাও মুখ খুলেছেন এই বিষয়ে।

এরকম সামাজিক পরিস্থিতিতে সরাসরি কলকাতা বইমেলা থেকেই প্রতিবাদীরা বিরোধীতায় সোচ্চার হয়ে জানিয়েছেন, এই আইনের বিরোধিতা যখনই করা হয়েছে এবং দেশের বুনিয়াদি সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে মোদী-শাহের সরকার তখনই তাঁদের দেশদ্রোহী বা সন্ত্রাসী তকমা দিয়েছে। তাই এই মেলা থেকেই তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরা আম্বেদকরকে বুকে নিয়ে চলি, আমরা ভগত সিংকে বুকে নিয়ে চলি’। আরও জানিয়েছেন, ‘১৯২৫ সালে আরএসএসের জন্মলগ্ন থেকেই এরা চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র করে এই মাটিকে ভেঙে ফেলার। আজও ওরা পারে নি, কালকেও ওরা পারবে না। ওদের সমস্ত ষড়যন্ত্র, সমস্ত প্রয়াস আমরা ভেঙে দেবো। কারণ ভারতবর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ কালও ছিল, আজও আছে’।