কয়লা চোরাচালান কাণ্ডে তদন্তাধীন অভিষেক জায়া রুজিরার দু’টি বিদেশী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

নির্বাচনের ঠিক আগেই এই কয়লা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে। এই নিয়েই বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিশানায় ছিলেন অভিষেক। এমনকি বাদ যাননি অভিষেকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরার।

0
115

কলকাতা: কয়লা কাণ্ড নিয়ে এখনও জলঘোলা অব্যহত। যেখানে নাম জড়িয়েছে অভিষেকে বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। চলতি মাসের প্রথম দিকেই ইডি সস্ত্রীক তৃণমূল সাংসদকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল। অভিষেক হাজিরা দিলেও দিল্লি যাননি রুজিরা। সূত্রের খবর কয়লা চোরাচালানের অভিযোগে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি বিদেশী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তদন্তাধীন।

পশ্চিমবঙ্গে কয়লা চোরাচালান কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। তদন্তকারীদের দাবি তারা ১৩০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন দেখেছে। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে এই বিপুল অঙ্কের টাকা কয়লা চোরাচালানের মাধ্যমে মাত্র কয়েক মাসে উৎপাদিত হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে কয়লা চোরাচালান কাণ্ডে উৎপন্ন অবৈধ অর্থের ৫০ শতাংশের বেশি বিনয় মিশ্রকে দেওয়া হয়েছিল। কথিত রয়েছে বিনয় মিশ্র হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। এমনকি কয়লাকাণ্ডের অন্যতন কিংপিন বিনয় মিশ্রের সঙ্গে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ থাকার তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি করেছে তদন্তকারীরা। আরও জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী-এর বিদেশী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হওয়া লেনদেনও পর্যবেক্ষণ করছে।

- Advertisement -

আরও পড়ুন- গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা জানিয়েছে তাদের দলে ১৪-১৫ জন বাংলাভাষী ব্যক্তি ছিল

জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল অভিযুক্ত অনুপ মাঝির সহযোগীর অফিসি এবং আবাসিক চত্বরে তল্লাশি চালানোর সময় এই লেনদেনের বিশদ বিবরণ বের করেছে। অনুপ মাঝি হলেন কয়লা চোরাচালান র‍্যাকেটের প্রধান অভিযুক্ত যাকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট গ্রেফতার করেছে। তৃণমূলের যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথিত সহযোগী বিনয় মিশ্র, যিনি বিদেশে লুকিয়ে আছেন বলে মনে করা হয়। তাঁকেই অনুপ মাঝি ৭৩১ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট লন্ডনের এবং আরেকটি ব্যাঙ্ককের। সিবিআই সূত্রে আগে জানানো হয়েছিল বিনয় ঘনিষ্ঠ নীরজ সিং নামে একজন অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলতেন। সিবিআই জানায় নিয়মিত লেনদেন চলত এই দুটি অ্যাকাউন্টে। এমনকি বিনয় মিশ্রের কাছে কলকাতায় পৌঁছত কয়লা পাচারের মূলচক্রী অনুপ মাঝি ওরফে লালার টাকা। সিবিআই-এর দাবি সেই টাকাই মধ্যস্থতাকারীরা ঘুরপথে পৌঁছে দিতেন কলকাতার বিভিন্ন প্রভাবশালীদের কাছে।

আরও পড়ুন- ত্রিপুরার জন্যে সময় দিলেন না রাষ্ট্রপতি, অভিযোগ সীতারামের

উল্লেখ্য, নির্বাচনের ঠিক আগেই এই কয়লা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে। এই নিয়েই বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিশানায় ছিলেন অভিষেক। এমনকি বাদ যাননি অভিষেকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরার। ২৫ জানুয়ারি বারুইপুরের সভায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট দেখিয়ে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করে বলেছিলেন, “লালার টাকা কার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে দেখুন। প্রতি মাসে ৩৬ লাখ টাকা করে ঢুকেছে। থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই টাকা ঢুকেছে।” এমনকি কয়লাকাণ্ডে রুজিরাকে নোটিস প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেছিলেন, “টাকা বিদেশে গিয়েছে। শুধু থাইল্যান্ড না, আরও নানা জায়গায় গিয়েছে।” এই ঘটনার পাশাপাশি প্রতিটি সভা, সমাবেশ থেকে শুভেন্দু অধিকারী অভিষেকের নাম নাকরে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলে আক্রমণ করেছেন।

এখানেই শেষ সাংবাদিকদের উদ্দেশে বললেছিলেন, “প্রেসের জন্য নিয়ে এসেছি প্রতিলিপি। দিয়ে দেব। ভাল করে স্টাডি করুন। ম্যাডাম নারুলাটা কে? গত লোকসভা ভোটে কলকাতা এয়ারপোর্টে সোনা নিয়ে ধরা পড়েছিলেন যিনি, তিনিই ম্যাডাম নারুলা।”