নিভৃতবাসে থাকেন জগন্নাথ মহাপ্রভুও, স্নানযাত্রায় পর জ্বরে কাবু হন জগতের নাথ

0
200

পূর্বাশা দাস: আগামীকাল জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা। জৈষ্ঠী পূর্ণিমায় প্রত্যেক বছর অনুষ্ঠিত হয় স্নানযাত্রা। এই দিনটিকে জগন্নাথ দেবের জন্মতিথি হিসেবেও ধরা হয়। পুরাণ মতে, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন প্রথমবার স্নানযাত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। ভক্তরা বিশ্বাস করেন স্নানযাত্রার দিনে প্রভুর দর্শন করলে পাপ মুক্তি ঘটে। ভক্তদের সকল মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন জগন্নাথ মহাপ্রভু। তাই স্নান পূর্ণিমার দিনটিকে একটি শুভ দিন হিসেবে মান্য করেন অগণিত ভক্তরা।

- Advertisement -

 

স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে পুরীর মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ স্নান মন্ডপে নিয়ে আসা হয়। এরপর রীতি অনুযায়ী নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট মেনে ১০৮টি কলসির জলে তিনটি বিগ্রহকে স্নান করানো হয়। এই অনুষ্ঠানকে জগন্নাথদেবের ‘জলাধিবাস’ও বলা হয়ে থাকে। মন্দিরের উত্তরের কুয়ো থেকে এই ১০৮ কলসি জল আনা হয়। এই কুয়োটির একটি তাৎপর্য রয়েছে। এটিকে ‘সোনাকুয়া’ নামেও ডাকা হয়। এইদিন পুরীতে খুব বৃষ্টিপাত হয়। তাই ভক্তদের বিশ্বাস প্রভু স্নানযাত্রা অনুষ্ঠানে প্রকৃতিও সামিল হয়। সকালে স্নানের পর স্নান পূর্ণিমার সন্ধ্যায় ‘গজাননবেশ’ ধারণ করেন প্রভু জগন্নাথ।

আরও পড়ুন-প্রতারণার শিকার হলেন মিমি চক্রবর্তী

স্নান পূর্ণিমায় ১০৮ কলসি জলে স্নান করার পর প্রভুর জ্বর আসে। তাই আগামী পনেরো দিন ভক্তদের দর্শন দেন না তিনি। নিভৃত বাসে থাকেন জগন্নাথদেব। সেবায়েতরা বিশেষ ‘পাচন’ খাইয়ে প্রভুকে সুস্থ করেন। এইসময় পুরীর জগন্নাথ দেবের মূল বিগ্রহের দর্শন বন্ধ থাকে। দর্শনার্থীদের জন্য মূল মন্দিরে তিনটি পটচিত্র রাখা হয়। রাজবৈদ্যের শুশ্রূষায় সুস্থ হয়ে রথযাত্রার দিন ভাই বোন সমেত বিশাল শোভাযাত্রা সহকারে মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন জগন্নাথদেব।

করোনা অতিমারীর জন্য এপ্রিল মাস থেকে দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রয়েছে পুরীর মন্দিরের দরজা। গত বছরের মতো এ বছরেও স্নানযাত্রা অনুষ্ঠানে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ভক্তরা টিভির পর্দায় জগন্নাথ মহাপ্রভুর স্নানযাত্রা অনুষ্ঠান দেখতে পারবেন। আগামী ১২ই জুলাই সমস্ত রকম কোভিড বিধি মেনেই অনুষ্ঠিত হবে রথযাত্রা। রথযাত্রা অনুষ্ঠানেও জন সাধারনের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একমাত্র সেবায়েত,পুরোহিতরাই রথের রশি টানতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে রথযাত্রা অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য সেবায়েতদের কোভিড ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ হতে হবে। জানা যাচ্ছে, আগামী ২৫শে জুলাই পর্যন্ত পুরীর মন্দির বন্ধ থাকবে।