পদ্মশ্রী পেলেন মমতার ‘শিক্ষারত্ন’ কাজি মাসুম আখতার

0
481

কলকাতা: প্রকাশিত হল ২০২০ সালের পদ্মশ্রী প্রাপকদের নামের তালিকা। সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ কৃতি ব্যক্তি। এই চার জনের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন শিক্ষক, প্রাবন্ধিক এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী কাজী মাসুম আখতার। সাহিত্য এবং শিক্ষার জন্য তাঁকে এই বিশেষ সম্মান দিতে চলেছে ভারত সরকার।

যাদবপুরের কাটুজুনগর স্বর্ণময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী মাসুম আখতার। ২০১৬ সালে ওই দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। সেই বছরেই শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্রোনাচার্য পুরষ্কার লাভ করেন। ২০১৭ সালে তাঁকে শিক্ষারত্ন সম্মান দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বছরেই সমাজ সংস্কারক হিসেবে শ্যামাপ্রসাদ সম্মান পেয়েছিলেন কাজী মাসুম আখতার।

- Advertisement -

আপাতভাবে এই সাফল্য সুন্দর মনে হলে আসলে তেমন নয়। তাঁর জীবনের যাত্রাপথ মোটেও এতটা মসৃণ ছিল না। ২০১২ সালে বন্দর এলাকার রাজাবাগান থানা এলাকার তালপুকুর আরা হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন কাজী মাসুম আখতার। মাদ্রাসায় পড়ুয়াদের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া চালু করেছিলেন। একই সঙ্গে চালু করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী পালন। মুসলিম সমাজে বাল্যবিবাহ প্রথা বন্ধের দাবিতেও সচেষ্ট হয়েছিলেন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কাজী মাসুম আখতার। সেটাই কাল হয়েছিল তাঁর জীবনে। সকলের সামনে হেনস্থা এবং প্রবল প্রহার করে এলাকা ছাড়া করা হয় তাঁকে।

কেন্দ্র তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিরোধী আইন নিয়ে এসেছে। এই নিয়েও অনেক আন্দোলন করেছিলেন এই বঙ্গতনয় কাজী মাসুম আখতার। সমাজের এই ধরণের নানাবিধ বিষয় নিয়ে নিয়মিত প্রতিবাদে সামিল হয়ে থাকেন শিক্ষক কাজী মাসুম আখতার। প্রবন্ধ বা সাহিত্য দিয়ে চেষ্টা করতে থাকেন সমাজকে অশিক্ষার আঁধার থেকে দূরে রাখতে। আর সেই চেষ্টাকেই কুর্ণিশ জানিয়েছে কেন্দ্র। পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে কাজী মাসুম আখতারকে।

নাম ঘোষণার পরেই শুভেচ্ছা ভেসে যাচ্ছে ফেসবুকের দেওয়াল থেকে ফোনের ইনবক্স। ঘন ঘন ফোন আসতেও শুরু করে দিয়েছে। এরই মাঝে এই প্রতিবেদককে ফোন করে দিলেন প্রতিক্রিয়া। প্রথম অনুভূতি, “অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। আর কী বলব বুঝতে পারছি না।” সেই সঙ্গে আরও বললেন, “দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। আরও অনেক কাজ করতে হবে।”

কাজী মাসুম আখতারের সঙ্গে রাজ্যের আরও চার জন পদ্মশ্রী পুরষ্কারে সম্মানিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন- পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী(আর্ট), ডাঃ সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়(মেডিসিন), ডাঃ অরুণোদয় মণ্ডল(মেডিসিন এবং শ্রী মণিলাল নাগ(আর্ট)।