রাজনৈতিক দীনতা ঢেকে রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর শীতবস্ত্র প্রদান, মন্তব্য শমীক ভট্টাচার্যের

0
35

পলাশ নস্কর, কলকাতা: হিঙ্গলগঞ্জে শীতবস্ত্র কেন নেই মুখ্যমন্ত্রী অসন্তুষ্ট হয়েছেন, কাজ না করলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলবেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এই মন্তব্য নিয়ে এদিন রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য মন্তব্য করে বলেন, পুলিশ কি ব্যবস্থা নেবে! হিঙ্গলগঞ্জের পুলিশ শয়ে শয়ে বিজেপি কর্মী যারা ঘর ছাড়া তাদের বাড়িতে ফেরাতে পারেনি। সুন্দরবনের, উত্তর ২৪ পরগনা অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় যারা ঘর ছাড়া আছেন তাদের বাড়ির গ্রিল পর্যন্ত খুলে নেওয়া হয়েছে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাড়িতে ফ্ল্যাগ লাগাতে গিয়েছিল হিঙ্গলগঞ্জ বাজারে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল একজন প্রান্তিক মানুষকে আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা হয়নি। তাহলে অন্য যে সমস্ত সরকারি জিনিসপত্র ওখানে পৌঁছয় সেগুলো বিলিবন্টন কিভাবে হয় এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে এটাও বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বিডিও পুলিশকে কেউ নৌকা ভাড়া দিচ্ছে না গাড়ি ভাড়াও দিচ্ছে না, কারণ পেমেন্ট নেই। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এরকমই মন্তব্য করেন শমীক ভট্টাচার্য(Shamik Bhattacharya)।

মুখ্যমন্ত্রীর শীতবস্ত্র বিলি নিয়ে তিনি(Shamik Bhattacharya) এদিন বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে আগে কখনও শীতবস্ত্র বিলি করতে দেখা যায়নি, এটা সত্যি নজিরবিহীন ঘটনা। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের এই বস্ত্রদান আসলে কোনও শীতার্ত মানুষের নগ্ন দেহ ঢাকার জন্য নয় রাজনীতির দীনতাকে ঢেকে রাখার জন্য এই উৎসব, সেটাও ঠিকমতো করা গেল না। তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা ধানের ন্যুনতম সহায়ক মূল্য পান না। মুখ্যমন্ত্রী যে কিষান মান্ডিগুলো তৈরি করেছেন সেগুলো মূলত কিছু অসাধু মানুষের রাত্রিবেলার আস্তানা। কোনও কৃষককে কৃষক মান্ডিতে দেখা যায়নি কারণ দালাল-মধ্যসত্ত্বভোগীদের হাতেই জিনিস বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

- Advertisement -

এদিন তাঁকে পঞ্চায়েত ভোটকে টার্গেট করে উঠোন বৈঠক করছেন সেটার কারণ কি, এই প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমরা আমাদের পার্টি কিভাবে করব, সংগঠন কিভাবে করব, কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবো কিভাবে, কিভাবে জনসম্পর্ক করব সেটা আমাদের ব্যাপার যে কোনও রাজনৈতিক দলের নিজস্ব পদ্ধতি আছে। তৃণমূলের তরফ থেকে বলা হচ্ছে আপনারা তৃণমূলের সাংগঠনিক রীতিকে অনুসরণ করছেন সেই প্রসঙ্গে তিনি(Shamik Bhattacharya) বলেন, অটল বিহারী বাজপেয়ি, লালকৃষ্ণ আদবানি কংগ্রেসের লেবার রুমে না থাকলে তৃণমূল নামক রাজনৈতিক দলটার জন্ম হতো না। অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রধানমন্ত্রী হওয়া যখন নিশ্চিত তখনই মুখ্যমন্ত্রী যিনি সেদিনের বিরোধী নেত্রী তিনি কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করতে পেরেছিলেন। কে কার থেকে শিখবে এ সমস্ত কথা বললে সাধারণ মানুষও হাসবে।

ডিএলএড প্রশ্ন পত্র ফাঁসে সিআইডি তদন্তভার নিয়েছে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবকিছুই ফাঁস হয়ে গিয়েছে এখানে কোনও কিছুরই কোনও গোপনীয়তা নেই সমস্ত মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। শুধু প্রশ্ন ফাঁস কেন আমরা প্রথম দিন থেকে বলছি তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্য সরকারের দ্বারা যত নিয়োগ হয়েছে প্রত্যেকটা নিয়োগ আতস কাঁচের নিচে আছে প্রত্যেকটা নিয়োগের নিরপেক্ষ তদন্ত দরকার।

কেশপুর ও মিনাখা বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্ত হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত কেন্দ্র কে নিতে হবে আজ নির্দেশে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিজেপি এই নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের কোনও মানুষেরই আজকে সিআইডি বা পুলিশের তদন্তের উপর আস্থা নেই । সাম্প্রতিক নদদিয়ার যে তৃণমূল নেতা মুর্শিদাবাদে খুন হয়ে গেলেন তার ক্ষেত্রেও তার পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে বলেছে পুলিশের উপর কোনও আস্থা নেই । বাধ্য করা হয়েছে থানায় নিয়ে গিয়ে সিআইডি তদন্তের দাবি করতে এক ঘন্টার মধ্যে। এরকমই মন্তব্য করলেম শমীক ভট্টাচার্য।

মিঠুন চক্রবর্তীকে প্রথমে বলেছিলেন যে আমার রাজনৈতিক গুরু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার গঙ্গাতীরে যে গঙ্গা আরতির পরিকল্পনা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সেটার তিনি প্রশংসা করেছেন। এই বিষয়ে তিনি বলেন, মিঠুন চক্রবর্তী সংস্কৃতি জগতের মানুষ তিনি তাঁর মত করে সহজ সরল ভাবে তাঁর বক্তব্য মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি একদিকে সরকারের সমালোচনা করেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। তাঁর সঙ্গে এটাও বুঝিয়ে দিচ্ছেন লড়াইটা কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের বিরুদ্ধে নয় ,কোনও নেতার বিরুদ্ধে নয়, লড়াই নীতির বিরুদ্ধে।

অখিলগিরির ভাইঝির নাম নার্সিং পরীক্ষার ক্ষেত্রে সেই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে হাজরায় বিক্ষোভ সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চারিদিকে বিক্ষোভ হবে বিক্ষোভ সবে শুরু হয়েছে। স্কুল শিক্ষক যারা চাকরি পাননি তারা বিক্ষোভ করেননি তারা বলছেন তাদের মেধা প্রতারিত হয়েছে। কলেজ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা বিক্ষোভ করছেন। যারা ভবিষ্যতে পুলিশ হবেন তারা বিক্ষোভ করছেন বর্তমান পুলিশরা তাদের উপর লাঠিচার্জ করছেন। নার্সরা দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন মিউনিসিপালিটি, কর্পোরেশন, ইরিগেশন, খাদ্য দফতর যেখানে যা নিয়োগ হয়েছে প্রত্যেক জায়গায় দুর্নীতি আছে। তারা সংগঠিত হতে পারছেন না, তাই জন্য আন্দোলন চোখে পড়ছে না। কিন্তু সর্বত্র এই আন্দোলন হবে এই আন্দোলন বাড়বে কারণ মানুষ সচেতন হয়ে গিয়েছেন। এই সরকারের ওপর যে ভয় ছিল এখন সাধারণ মানুষ ভয় মুক্ত হয়ে গিয়েছেন, তারা প্রতিবাদ করছেন।