টেক্সাস: চিনে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,১১৮ তে। রাতারাতি ভাইরাসে মারা গেলেন আরও ১১৪ জন। বৃহস্পতিবার চিনের কার্যকরী দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে এমনই তথ্য।
এই মুহূর্তে শুধু চিনেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ৭৪,৫৭৬। এই মারন রোগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছেন বৈজ্ঞানিকরা। কিন্তু সমাধান খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা সহজে। সম্প্রতি আমেরিকার টেক্সাক্সের একদল গবেষক দাবি জানিয়েছেন, তাঁরা এই করোনাভাইরাস দমন করার দিকে একধাপ এগিয়েছেন। তাঁরা জানতে পেরেছেন ভাইরাসটি একটি বিষাক্ত প্রোটিনকে হাতিয়ার বানিয়ে মরনাত্মক হয়ে উঠেছে। তাঁদের এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে ‘সায়েন্স’ জার্নালে।
গবেষকেরা জানতে পেরেছেন যে, স্পাইক প্রোটিন নামে একটি বিষাক্ত প্রোটিন মানব শরীরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে এই ভাইরাসটি। গবেষকেরা এই প্রোটিনটিকে ভালভাবে চেনার চেষ্টা করছেন। তাঁরা টের পেয়েছেন, এক-এক করোনাভাইরাসে এক-এক রকমের আকার নেই প্রোটিনটি। এই নিয়েই পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছিল। এই বিষয়ে
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকিউলার বায়োসায়েন্সের অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসর জেসন ম্যাকলেলান দাবি করলেন, তাঁরা ভাইরাসটির আণবিক গঠন জেনে ফেলেছেন। তাঁরা আশা করছেন খুব দ্রুত এই ভাইরাসের অ্যান্টি ভ্যাকসিন বারে করতে পারবেন।
এই নিয়ে ম্যাকলেলান আরও বলেছেন, ‘‘করোনাভাইরাস যদিও একাধিক প্রোটিনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে, তবে এর মধ্যে ‘স্পাইক’ প্রোটিনটি সব চেয়ে ভয়ানক। এই প্রোটিনটি মানব কোষের রিসেপটর আটকে যায়। এই রিসেপটর প্রোটিনটি অনেকটা মানব কোষের দরজার মতো। স্পাইক প্রোটিন এক বার রিসেপটরে আটকে গেলেই ভাইরাসের মেমব্রেন মানুষের কোষের মেমব্রেনের সঙ্গে জুড়ে যায়। তার পর সহজে ভাইরাসের কোষে ঢুকে সংক্রমণ শুরু করে দেয়।’’ তিনি জানান, এই ভয়ানক প্রোটিনটিকে দমন করতে হলে তাকে দেখতে কেমন, সেটা জানা দরকার ছিল। তাই তাঁরা সবার আগে এই কাজটাই করল।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে কিছু বিজ্ঞানী ‘সার্স-সিওভি-২’-এর জিনোম খুঁজে বার করেন। ম্যাকলেলানের দল ওই জিনোমটিকে ব্যবহার করে স্পাইক প্রোটিনের জিনকে চিহ্নিত করে। তারপর নির্দিষ্ট জিনটিকে কৃত্রিম ভাবে তৈরি করেন তাঁরা এবং গবেষণাগারে স্তন্যপায়ী প্রাণীর কোষে জিনটিকে ঢুকিয়ে স্পাইক প্রোটিনটিকে তৈরি করেন। এর পরে অতি আধুনিক অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে প্রোটিনটির থ্রিডি গঠন কেমন, তা জেনে নেন।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী স্টিফেন মোর্স সাধুবাদ জানিয়েছেন ম্যাকলনের দলকে। তিনি জানিয়েছেন , ভ্যাকসিন তৈরি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে এই আবিষ্কার। তবে এই ভ্যাকসিন নিয়ে ম্যাকলেলানের আশঙ্কা, কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরি করতে এখনও দেড় থেকে দু’বছর সময় লাগবে।