খাস ডেস্ক: ৬২ বছর আগে ঘটা এক ঘটনায় আজও জনমানব শূন্য শহরটি। অতীতে এক সময় খনিতে ভরা ছিল এই শহর। সে সময় এ শহরটি জনগণের আওয়াজে মেতে থাকত। কিন্তু আচমকাই একদিন আগুনে ছেয়ে যায় গোটা শহরটি। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত গ্যাস আর ধোঁয়া। সে সময় সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বেঁচে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বর্তমানে এটি মানবহীন ভূতুড়ে শহর।
এটি সুদূর আমেরিকার (America) পেনসিলভেনিয়ার (Pennsylvania) সেন্ট্রালিয়া (Centralia) শহর। ১৯৬২ সালের মে মাসে ভয়াবহ আগুনে গ্রাস করে এই শহরটিকে। আগুনের উৎস জানা না গেলেও তার প্রভাব ছিল ভয়ানক। এই বিপর্যয়ের আগে এক উন্নয়নশীল শহরই ছিল এটি। তবে এই দুর্ঘটনার পর জনমানব শূন্য হওয়ায়, এই শহর ভূতুড়ে শহর নামেই বর্তমানে পরিচিত।
জানা গিয়েছে, পেনসিলভেনিয়ার (Pennsylvania) প্রশাসন আগুন নেভাতে সবরকম চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, আগুনকে নেভানো যায়নি সেসময়। সেই আগুন নেভাতে প্রায় ৩০ বছরে সময় লেগে গিয়েছিল। এমনকি তা করতে প্রায় ৭ মিলিয়ন ডলার খরচও করেছিল পেনসিলভেনিয়ার প্রশাসন। তবে শেষে ১৯৯০ সালে হাল ছেড়ে দেয় এই শহরের প্রশাসন। এই বিষয়ে ওই শহরের প্রশাসনিক আধিকারিকরা বলছেন, নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এই আগুন আরও একশো বছর জ্বলবে।
গত তিন দশকে পর্যটকদের কাছে এই শহরটি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। শহরের রাজপথে আঁকা সুন্দর দৃশ্য মুগ্ধ করে দেয় পর্যটকদের। এখানকার চিত্রশিল্পীরাই রাজপথে মুগ্ধ করা এই সমস্ত চিত্র এঁকেছিলেন। কিন্তু, ২০২০ সালে করোনার সময় পর্যটকদের আটকাতে রাজপথের দায়িত্বে থাকা সংস্থা ময়লা দিয়ে রাস্তা ঢেকে দেয়। যার জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় পর্যটক ভ্রমণ।
আরও জানা গিয়েছে, ১৮৬৬ সালে গড়ে উঠেছিল এই শহরটি। খনিজ শিল্পে ভর করেই এগিয়ে যেত এই শহরের অর্থনীতি। সে সময় হাজার হাজার মানুষ কাজ পেয়েছিলেন এই খনিতে। এরপর আমেরিকার আর্থিক অবনতির জেরে সেন্ট্রালিয়ার একাধিক খনি বন্ধ হয়ে যায়। ১৮৯০ সালে এই শহরের বাসিন্দার সংখ্যা ছিল ২৭০০। তাঁদের প্রত্যেকেই কোনও না কোন খনির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু, ১৯৬২ সালের লাগা ভয়াবহ আগুন যেন সেন্ট্রালিয়ার (Centralia) শেষের শুরু।