বেজিং: মারণ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে চিনে মৃতের সংখ্যা ১৭০ ছুঁয়ে গেল৷ চিনে আটকে থাকা বিদেশি পর্যটকরা দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন৷ তাঁরা কেউ কোরোনা ভাইরাস আক্রান্ত কি না, সে দিকে নজর চিন সরকারের৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে, চিনের বাইরেও বহু মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে৷ চিনে এখনও পর্যন্ত ৭ হাজার ৭১১ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে৷
এর মধ্যে ৩৭ জনেরই মৃত্যু হয়েছে চিনের হুবেই প্রদেশ ও সিচুয়ান প্রদেশে৷ ওই দুই প্রদেশই হল করোনা ভাইরাসের এপিসেন্টার৷ ইউহান থেকে ১৯৫ জন মার্কিন নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে৷ কারণ হুবেই প্রদেশে বসবাস করেন ১.১ কোটি৷ ২১০ জন জাপানি নাগারিককে চার্টার ফ্লাইটে চিন থেকে উদ্ধার করে টোকিয়োও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে ৯ জনের দেখা গিয়েছে জ্বর ও কাশি হচ্ছে৷ পরীক্ষার পরে দেখা যায়, ওই ৩ জনই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত৷ ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য দেশও তাদের নাগরিকদের দেশে ফেরাচ্ছে৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বৃহস্পতিবার বৈঠকে এই ভাইরাসটির জন্য বিশ্বব্যাপী জরুরী অবস্থা রয়েছে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করবে।
“গত কয়েক দিনে ভাইরাসটির অগ্রগতি, বিশেষত কিছু দেশে, মানব-থেকে মানবিক সংক্রমণ, আমাদের উদ্বেগিত করেছে,” বুধবার ডব্লিউএইচওর চেয়ারম্যান টেড্রোস অ্যাধনম ঘেরবাইয়াসেস জার্মানি, ভিয়েতনাম এবং জাপানের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, “যদিও চীনের বাইরের সংখ্যা এখনও তুলনামূলকভাবে কম, তারা অনেক বড় প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা রাখে।”
২০০২-০৩ সালে যে ভাবে এসআরএসএ ছড়িয়ে পড়েছিল চিনে, ঠিক সেই ভাবেই যেন মারণ করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে৷ ভারতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মেলেনি। দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ওপর নিয়মিত নজরদারি চলছে। তবে, বিভিন্ন হাসপাতালে কয়েকজনকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৷ এখনও কারোর রক্তেই করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি৷ তবে নেপালে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের খোঁজ মেলায় বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ভারত, নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছে৷ উত্তরাখণ্ডের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা জারি হয়েছে৷
চিনা এয়ারলাইন্স ইতিমধ্যেই যাত্রীদের নিজস্ব বোতল আনার পরামর্শ দিয়েছেন। সমস্ত বিমানে খাবার দেওয়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এমনকী টেবিল ক্লখ, ন্যাপকিনের মতো পুনর্ব্যবহার্য দ্রব্যের বদলে পেপার টাওয়েল যা একবার ব্যবহার্য তাই ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকী বালিশ, কম্বল, তোয়ালে, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্রও বন্ধ করা হয়েছে। হংকংয়ের বিমানবন্দরেও একই হাল। পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য থাইল্যান্ড। সেখানেও অনেকের শরীরে মিলেছে এই ভাইরাস। যার ফলে পর্যটন ব্যবস্থাও জোর ধাক্কা খেয়েছে চিন।