পূর্ব বর্ধমান: আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে বর্তমানে বিক্ষোভে সামিল গোটা বাংলা। আর এই আবহেই বারবার সামনে আসছে একের পর এক যৌন নির্যাতনের ঘটনা। এবার এক কিশোরীকে যৌন নির্যাতন করার খবর পেয়ে তাঁরই বাবা স্কুটার নিয়ে খুঁজে বার করলেন অভিযুক্তকে। এরপরই স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত যুবককে। এই ঘটনা শোনার পর ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী পূর্ব বর্ধমানবাসী (Purba Bardhaman)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার ১৪ বছরের এই কিশোরী এক শিশুকে নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় এক অপরিচিত ব্যক্তি শিশুটিকে আদর করার অজুহাতে ওই কিশোরীকে যৌন নির্যাতন করে। এরপরই বাড়ি ফিরে কিশোরী কান্নায় ভেঙে পড়ে। গোটা ঘটনাটি তাঁর মা-বাবকে জানায়। মেয়েকে যৌন নির্যাতনের কথা শুনে তাঁর বাবা তড়িঘড়ি স্কুটারে মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে যান অভিযুক্তকে খোঁজার উদ্দেশ্যে।
মেয়ের থেকে যুবকের বিবরণ শুনে টানা কয়েক ঘণ্টা মেয়েকে নিয়ে স্কুটারে এলাকায় ঘুরে অভিযুক্ত যুবককে খুঁজে বার করেন নির্যাতিতার বাবা। এরপরই তিনি ধৃত যুবকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। বচসা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভিড় জমে যায় পথ চলতি মানুষ এবং এলাকাবাসীদের। এরপরই নির্যাতিতার বাবা গুসকরা ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত যুবকের নাম প্রদীপ তুড়ি। গত বুধবার তাকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
নির্যাতিতার বাবার এই তৎপরতা দেখে পুলিশ কুর্নিশ জানায় তাঁকে। এই বিষয়ে গুসকরা ফাঁড়ির এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা ঘটলে অনেকেই চেপে যান। তাই অপরাধীদের সাহসও বেড়ে যায়। নির্যাতিতার বাবা যেভাবে অভিযুক্তকে খুঁজে বার করেছেন, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা চাই যাতে সকলেই নারী নির্যাতনের ঘটনার বিরুদ্ধে এ ভাবেই সোচ্চার হয়।’’ কিশোরীর বাবা বলেছেন, “এ রকম অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি না দিলে সমাজে অপরাধ বেড়েই যাবে। তাই মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই অপরাধীকে খুঁজে বার করেছি।”