আসানসোল: বারাবনি থেকে পাণ্ডবেশ্বর সর্বত্র চলছেই কয়লা পাচার, আসানসোল,দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ফের কয়লা মাফিয়াদের দাপাদাপি বেড়ে যাওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে খনি অঞ্চল। পুলিশের পরপর দুদিনের অভিযানের পর খুলে গেছে প্যান্ডোরার বাক্স। ফের পশ্চিমবঙ্গ আর ঝাড়খন্ড সীমানায় কুলটি থানা ও সালানপুর থানায় কয়লা বোঝাই লরিগুলি আটক করা হয়।
আরও পড়ুনঃ Terrorists Killed in Encounter : সপ্তাহ শেষে উত্তপ্ত কাশ্মীর, সেনার গুলিতে খতম দুই লস্কর জঙ্গি
সূত্রের খবর, ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ডুবুরডিহি চেকপোস্টে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের অভিযানে ঝাড়খন্ড থেকে এই রাজ্যে আসার পথে ৩০ টি লরি ধরা পড়েছে। পাশাপাশি, ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লরি গুলি বেআইনি খনি থেকে কয়লা তুলে নিয়ে আসছিল। স্বাভাবিকভাবেই, এতগুলি কয়লা বোঝাই লরি আটকের চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পুলিশ মহলে। প্রশ্ন উঠছে একটাই, পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে কীভাবে এই অন্ত:রাজ্য বেআইনি কয়লার কারবার চলছিল?
এই বিষয়ে কমিশনারেটের ডিসি অভিষেক মোদি জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যেসব ট্রাক চালকদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের কাছে উপযুক্ত কাগজপত্র ছিলনা বলে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের মুগমা, নিরসা,গোবিন্দপুর থেকে লরি বোঝাই কয়লা নিয়ে ডুবুরডিহি চেকপোস্ট পার করে এই কয়লা চলে যেত কলকাতা। প্রতি টন কয়লা বিক্রি হতো ১০ হাজার ২০০ টাকা করে। ঝাড়খন্ড থেকে কয়লা বোঝাই ট্রাক কাঁটাঘরে কয়লা ওজন করিয়ে জাতীয় সড়কে এসে উঠলেই সেই অবৈধ খনির কয়লা “বৈধ” হয়ে যেত। এরজন্য খরচ করতে হতো ৬০০ টাকা। তাতেই পাওয়া যেত চালান, ওয়ে বিল, বনবিভাগের কাগজ, জিএসটির কাগজ সবকিছুই। ধৃতদের জেরা করে এসব কথা জানা গিয়েছে। ডিসি অভিষেক মোদী জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে আরও তল্লাশি চলবে।
উল্লেখ্য, বাংলার পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের মত জেলাগুলির পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের বেআইনি কয়লার কারবার বন্ধ করতে ২০২০ সালের প্রথম থেকেই উঠে-পড়ে লেগেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ও ইডি। সিবিআই ও ইডির একের পর এক অভিযানে গ্রেফতার হয়েছিল বেশকিছু কয়লা মাফিয়া। তখন মনে করা হয়েছিল যে, পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি কয়লার কারবার বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু সেটি যে সম্পূর্ণ ভুল ছিল তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।
তবে গত চারদিন ধরে শুরু হওয়া অভিযানে কিছু সাফল্যও পেয়েছে পুলিশ। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় এখনও বেআইনি কয়লার কারবার কারা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের খোঁজে নেমে দুজনের নাম উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।