তারাপীঠ: বছরের বাকি সমস্ত অমাবস্যার মধ্যে ভাদ্র অমাবস্যাকে একটু আলাদাভাবেই পালন করা হয়। ভাদ্র মাসের অমাবস্যা তিথি ‘কৌশিকি অমাবস্যা’ ( Kaushiki Amavasya) নামেই পরিচিত। এই বিশেষ দিনটি তারা মায়ের সাধনায় ব্যস্ত থাকেন ভক্তেরা। দেবী কৌশিকী হলেন আদ্যাশক্তি মহামায়ার এক রূপ। এই দিনটি তন্ত্রসাধনার এক বিশেষ দিন। তাই এই দিন ভক্তের ঢল নামে তারাপীঠ মন্দিরে এবং মহাশ্মশানে।
‘কৌশিকি অমাবস্যা’ ( Kaushiki Amavasya) তিথিতে লক্ষ লক্ষ সাধক এবং ভক্তের সমাগম ঘটে তারাপীঠ মন্দিরে। এই দিন তারা মা-কে পোলাও, অন্ন, পাঁচ রকমের ভাজা সঙ্গে খিচুড়ি, বিভিন্ন তরকারি ভোগ অর্পণ করা হয়। সন্ধ্যায় আবার লুচি, সুজি, ভাজা, বিভিন্ন মিষ্টি সহকারে শীতল ভোগও দেওয়া হয়। নিশিথে খিচুড়ি ও বলিদানে পাঁঠার অংশ দিয়ে ভোগ অর্পণ করা হয়।
২০২৪ সালের এই তিথি পড়ছে ১৫ ভাদ্র অর্থাৎ ইংরাজির ১ সেপ্টেম্বর রবিবার। ১৫ ভাদ্র রবিবার, ভোর ৫ টা ৭ মিনিট থেকে শুরু হবে এই তিথি। তা চলবে ১৭ ভাদ্র অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৬ টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত। এই দিনটি তন্ত্রসাধনারও এক অন্যতম দিন। ফলে এই দিন বহু তান্তিকেরাও তারপীঠ মহাশ্মশানে জড়ো হন তন্ত্রসাধনার কাজে।
এই বিশেষ দিনটিতে প্রতিবছর রেল কর্তৃপক্ষ হাওড়া (Howrah) থেকে রামপুরহাট (Rampurhut) পর্যন্ত একটি স্পেশাল ট্রেন চালায়। যাতে করে বিগত ২ বছর প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ পুন্যার্থী এসেছিলেন। তবে চলতি বছরের এই তিথিতে তারাপীঠে আসার জন্য অগ্রিম টিকিট এবং হোটেল বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। যা দেখে মন্দির কর্তৃপক্ষ মনে করছেন এই বিশেষ দিনে একটি মাত্র স্পেশাল ট্রেনে অসুবিধার সৃস্টি হতে পারে ভক্তদের।
‘কৌশিকি অমাবস্যা’ (Kaushiki Amavasya)-র বিশেষ তিথিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ট্রেন না থাকায় প্রায় প্রতিবছরই হয়রানির স্বীকার হন বহু পর্যটকেরা। তাই মন্দির কর্তৃপক্ষ কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি (Siliguri), ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) দেওঘর এবং শিয়ালদহ (Sealdah) থেকে একটি করে স্পেশাল ট্রেন চালানোর জন্য রেলমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছেন। সেবায়তদের দাবি, বহু ভক্তের মা-এর কাছে পুজো দিতে আসার ইচ্ছা থাকলেও তা সম্ভব হয় না ট্রেনের টিকিট না পাওয়ায়।
হোটেল মালিকরাও এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ‘কৌশিকি অমাবস্যা’ (Kaushiki Amavasya)-র জন্য হোটেল বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। গত বছর প্রায় সমস্ত হোটেলগুলিতেই তিন দিনের প্যাকেজে হোটেল বুকিং করা বাধ্যতামূলক ছিল। তাই গত বছর ভক্তদের ভিড়ও ছিল বিগত বছরগুলির তুলনায় কিছুটা কম। তাই প্রশাসন পক্ষ থেকে এবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হোটেল বুকিং-এর ক্ষেত্রে এই নিয়ম আর কার্যকরী হবে না। তাই সব মিলিয়েই এবার আশা করা যাচ্ছে এই বছর ‘কৌশিকি অমাবস্যা’ (Kaushiki Amavasya) তিথিতে ভক্ত সমাগম অন্যান্য বছরের তুলনায় বাড়বে।