নেতাজির স্পর্শ পাওয়া কাঠের চেয়ারকে দেবজ্ঞানে পুজো

0
25

তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: ৭৩ বছর ধরে রাখা আছে সেই চেয়ার। যেখানে বসেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু(Netaji Subhash Chandra Bose)। সেই চেয়ারে তারপর থেকে বসেননি আর কেউ। বাঁকুড়ার দেশুড়িয়া গ্রামের কর্মকার বাড়িতে যত্নে রাখা আছে সেই চেয়ার। ১৯৪০ সালের সভা মঞ্চে সুন্দর সোফা সরিয়ে দিয়ে কাঠের এই চেয়ারেই বসেছিলেন। এরপর থেকে ফের কোনোদিন নেতাজি ফিরে এসে আবার বসবেন এই চেয়ারে সেই আশাতেই এখনও সযত্নে রাখা হয়েছে সেই চেয়ার।

আরও পড়ুন মহাকালের দরবারে ঋষভ পন্থের জন্য প্রার্থনা করলেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা

- Advertisement -

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন তখন তীব্ররূপ নিয়েছে। ১৯৪০ এর ২৮ এপ্রিল তপ্ত বাঁকুড়ায় হাজির হন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু(Netaji Subhash Chandra Bose)। গঙ্গাজলঘাটির বুকে সভা করতে এসে মঞ্চে রানীগঞ্জ থেকে ভাড়া করে আনা সুন্দর সোফা সরিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের জন্য আনা কাঠের চেয়ারে বসেন নেতাজি। আগুন ঝরানো বক্তৃতা শেষে নেতাজি মঞ্চ ছাড়তেই আর দেরি করেননি দেশুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রামরূপ কর্মকার। ছুটেছিলেন মঞ্চের উদ্দেশ্যে। তাঁর বাড়ি থেকে আনা সেই চেয়ারেই বসেছিলেন নেতাজি। সটান মঞ্চে উঠে সেই চেয়ার মাথায় তুলে হেঁটে সেদিন বাড়ি ফিরেছিলেন রামরূপ কর্মকার।

আরও পড়ুন ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের প্রভাব কমাতে পাকিস্তান-নেপালে অর্থ বিনিয়োগ করছে চিন: Top IPS officers

এরপরে বাড়িতে ফিরে চেয়ার রেখেছিলেন নিজের বাড়ির ঠাকুরঘরে। বাড়ির সকলকে বলেছিলেন ওই চেয়ারে নেতাজির ছোঁয়া আছে। তাই সেই চেয়ার যেন যত্নে রাখা হয়। তারপর দামোদর দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহু জল। প্রিয় নেতাজি নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন। আরও পরে দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের মীমাংসা আজও হয়নি। নেতাজিকে হারানোর একরাশ যন্ত্রণা নিয়ে আজও দিন কাটে কর্মকার পরিবারের। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সযত্নে কর্মকার পরিবার আগলে রাখেন নেতাজির ছোঁয়া পাওয়া সেই সাধারণ কাঠের চেয়ারটিকে। পরিবারের কূলদেবী মনসার নিত্য পুজোর পাশাপাশি শূন্য কাঠের চেয়ার কর্মকার বাড়িতে পূজিত হয় দেবতাজ্ঞানে। শূন্য কাঠের চেয়ারকে ঘিরে যাবতীয় আবেগ ও অহঙ্কার আবর্তিত হয় দেশুড়িয়া গ্রামের কর্মকার পরিবারের।