খাসডেস্ক: স্বাস্থ্যভবনের (SWASTHYA BHAWAN) সামনে রাতভর অবস্থানের পর নিজেদের দাবি থেকে একচুলও সরেননি জুনিয়র চিকিৎসকরা। ৫ দফা দাবির সঙ্গে জুড়েছে আরও একদফা দাবি। মোট ছ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। বৃষ্টিভেজা রাতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন নির্যাতিতার পরিবারও। এদিন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে এসে নির্যাতিতার বাবা আশার আলো দেখতে পান। তিনি বলেন,“আশা করছি প্রশাসনের শুভ বুদ্ধি উদয় হবে। আশা করছি আমরা বিচার পাব।“ নির্যাতিতার মা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উৎসবে যোগ দিতে বলছেন। আমার কাছে এটাই উৎসব।“ গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রশাসনের তরফে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসার চেষ্টা হয় সরকারের তরফে। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উদ্দেশে ইমেল করেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। ইমেলে জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। ১০ জনের প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। যদিও সেই ইমেল বার্তায় সাড়া দেননি আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। ইমেলের ভাষা নিয়ে আপত্তি তোলেন তাঁরা। পাশাপাশি বলা হয় রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের ইস্তফা চাইছেন আন্দোলনকারীরা। আর সেই স্বাস্থ্যসচিবের অ্যাকাউন্ট থেকেই মেল পাঠানো হয়েছে। যা অত্যন্ত অপমানজনক।
আরও পড়ুন :ফেসবুক, টুইটার ব্যবহারে AGE LIMIT! শৈশবকে মাঠে ফেরাতে নয়া উদ্যোগ
রাত পেরিয়ে সকাল হলেও এখনও জট কাটেনি। সকালে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে জানানো হয় তাঁরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তবে ১০ জনের প্রতিনিধি দল নয়। ২৫ জনের প্রতিনিধি দল নবান্নে যাবে। আর আলোচনায় বসা মানে বিক্ষোভ-অবস্থান তুলে দেওয়া হয়। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কি পদক্ষেপ করছে সেটা দেখার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষও। সকাল সকালই অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করলেন তাঁরা। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য। মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার মধ্যে কর্মে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম নির্দেশকে উপেক্ষা করে নিজেদের দাবিতে অনড় থাকেন আন্দোলনকারীরা। সেদিনই স্বাস্থ্যভবন অভিযান করেন তাঁরা। হাতে প্রতীকী ব্রেন, প্রতীকী চোখ, প্রতীকী মেরুদণ্ড ও পায়ের হাড় নিয়ে মিছিলে হাঁটতে দেখা যায় জুনিয়র চিকিৎসকদের।
আরও পড়ুন : ১৫ মাস পর মুক্তি, গরুপাচার মামলায় দ্বিতীয় জামিন সুকন্যার
জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবিগুলি হল, প্রথমত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সমস্ত দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করা, অপরাধের উদ্দেশ্য সামনে আনা এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। দ্বিতীয়, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার। তৃতীয়, কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফা। চতুর্থ, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। পঞ্চম, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভয়মুক্ত পরিবেশ গড়া এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত করা। এ ছাড়াও রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্যভবনের (SWASTHYA BHAWAN) স্বাস্থ্য অধিকর্তা (ডিএইচএস) এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা (ডিএমই)-র ইস্তফাও চেয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।