
নিজস্ব সংবাদদাতা, ভগবানপুর: স্ত্রী’কে খুন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। অবৈধ সম্পর্কের কারণে তাদের বাড়ির মেয়েকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি মৃতার বাপের বাড়ি সদস্যদের অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর বিধানসভার কাজলাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের লোহাবাড় গ্রামে।
গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ তুলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে স্থানীয় বাসিন্দারা থেকে মৃতের বাপের বাড়ি সদস্যরা। দেহ উদ্ধার করতে ভগবানপুর থানার পুলিশ পৌঁছালে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে মৃত গৃহবধূর নাম ফাল্গুনী মাইতি (৩৭)।
শুক্রবার মৃতদেহটি উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। যদিও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য স্বামী তন্ময় মাইতি পলাতক রয়েছে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর বিধানসভার কাজলাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের লোহাবাড় গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে জিতে পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তন্ময় মাইতি।
বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা নাগাদ শ্বশুর বাড়িতে ফাল্গুনী মাইতি ফাঁসিতে আত্মঘাতী হয়েছে বলে প্রতিবেশীদের জানায়। এই মৃত্যু কোন মতে স্বাভাবিক বলে মনে হয়নি মৃতার বাপের বাড়ি সদস্যরা থেকে প্রতিবেশীরা। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আছে ভগবানপুর থানার পুলিশ। বাড়ির খাটে মৃত অবস্থায় শুয়ে রয়েছে বধু ফাল্গুনী মাইতি।
পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে প্রতিবেশীরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য তন্ময় মাইতি শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হন। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও মৃতদেহ উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে নামানো হয় ভগবানপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ও পাশাপাশি কয়েকটি থানার পুলিশ।
অবশেষে গভীর রাতে প্রতিবেশীদের বুঝিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। শুক্রবার মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মৃত বধূ ফাল্গুনী মাইতি কাকু চণ্ডীপুর থানার গড়গ্রামের বাসিন্দা সংকল্প সামন্ত বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আমার ভাইজিকে খুন করে খাটের উপর শোয়ানো অবস্থায় রয়েছে। জামাই তন্ময় মাইতি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। অবৈধ সম্পর্কের লিপ্ত রয়েছে জামাই। কার সঙ্গে জামাই অবৈধ সম্পর্কের কথা প্রতিবেশীরা জানাচ্ছে না। সেই কারণে আমার ভাইজিকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই৷’’
ভগবানপুর থানার ওসি নাড়ুগোপাল বিশ্বাস জানান, যদিও এখনও পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তে রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে। যদিও মৃতদেহ উদ্ধার করার সময় স্বামী তন্ময় মাইতি বাড়িতেই ছিল না৷