খাসডেস্ক: চড়াম চড়াম, গুড়-বাতাসা, নকুলদানা। তাঁর ভোকাল টনিকে বিদ্ধ হতেন দলের আপামর কর্মী-সমর্থক। অন্যদিকে বিরোধীপক্ষের কাছে যা ছিল হুমকি, হুঁশিয়ারির মতো। অনুব্রত মণ্ডল ছাড়া বীরভূমের মাটি! কার্যত ভাবাই ছিল দায়। গরুপাচার মামলায় সেই অনুব্রত মণ্ডলকেই (ANUBRATA MONDAL) প্রথমে খাঁচাবন্দি করে সিবিআই। এরপর এল ইডি। আসানসোলের জেল থেকে সোজা উড়ে গেলেন দিল্লিতে। আদালতের নির্দেশে আশ্রয় জুটল তিহাড় জেলে। শুধু ‘বাপ’নয়, মেয়ে সুকন্যা, হিসাবরক্ষক মনীশ কোঠারি সবাই একে একে পৌঁছে গেলেন তিহারে।
আরও পড়ুন: আন্দোলন থামছে না, স্লোগান ধরে রেখে CGO যাত্রা জুনিয়র চিকিৎসকদের
অনুব্রতর (ANUBRATA MONDAL) আগে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের যুবনেতা শান্তনু, কুন্তল, পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। তবে এরা সকলেই ছিলেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পিছপা হয়নি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। জেলে যেতেই পদ কেড়ে নেওয়া হয় পার্থর। এমনকি তৃণমূল মহাসচিবের পদটি পর্যন্ত তুলে দেওয়া হয়। ওইদিকে কুন্তল-শান্তনুকে সাসপেন্ড করে দল। মানিক ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয় সকল দলীয় পদ থেকে। দুর্নীতির সঙ্গে কোনরকম আপোস নয়। বার্তা ছিল এটাই।
আরও পড়ুন: মেয়ের পর বাবা, পুজোর আগেই খাঁচামুক্ত ‘বীরভূমের শের’
ব্যতিক্রম ছিল কেবল বীরভূমের কেষ্টা। কোনভাবেই দল তাঁর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ব্যবস্থা তো দুরের কথা অনুব্রত মণ্ডলের (ANUBRATA MONDAL) প্রতি বরাবর নরম মনোভাব দেখিয়ে এসেছে । অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর দু-দুটো ভোট গিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোট ও লোকসভা ভোট। প্রতিবারই চিন্তা ছিল ‘বীরভূমের বাঘের’ অনুপস্থিতিতে কিভাবে জেলার ভোট সামলাবে তৃণমূল। তবে প্রতিবারই সহজে ভোট বৈতরণী পার করেছে । নেপথ্যের কারণ হিসেবে অনেকেই অনুব্রত মণ্ডলের হাতে গড়া সংগঠনের কথা বলে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও অনেকসময় অনুব্রতর হয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল। অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে অনুব্রতর কন্যা সুকন্যাকে নিয়েও চিন্তিত ছিলেন নেত্রী। একই মামলায় এরপর তিহার জেলে ঠাঁই হয় সুকন্যার। তৃণমূল আমলে এই প্রথম কোন মামলায় বাবা ও মেয়ে জলবন্দি হয়। কিন্তু অনুব্রতর বিরুদ্ধে ঢেঁকুর পর্যন্ত তোলেনি দল। তাঁর অনুপস্থিতিতে জেলা সভাপতির পদে কাউকে আনা হয়নি। বরং কোর কমিটি গঠন করে সামাল দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে সবটা। কিন্তু কেন? কেন বাকিদের মতো অনুব্রতর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হল না? কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও অনেকে মনে করছেন অনুব্রতকে চটাতে চাইনি তৃণমূল। হয়তো বড় কোন আশঙ্কার সম্ভাবনা ছিল। তাই তিনি অনুচ্চারিতভাবে থেকে গিয়েছেন পদে। শুক্রবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট অনুব্রত মণ্ডলকে জামিন দেয়। আগেই সিবিআই এর মামলায় জামিন পেয়েছিলেন। এবার ইডির মামলায় পেলেন জামিন। তাঁর জামিনের খবর শুনে উজ্জীবিত অনুব্রত অনুগামীরা।