মিলন পণ্ডা, দিঘা: আকাশ জুড়ে কালো মেঘের দাপট। পুবালি বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টিও ঝরেছে মৃদুমন্দ। আর এই আবহাওয়াতেই সাগরে লঞ্চ-ট্রলারের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ। শুক্রবার ও রবিবার মিলে চলতি মরশুমে ৬ টন ইলিশ এসেছে দিঘা মোহনার মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে।
প্রকৃতি সহায় হলে দ্রুত খরা কাটিয়ে বাংলালির পাতে দেদার ইলিশ পড়বে বলে আশা করছেন মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীরা। দুমাসের ব্যান পিরিয়ড পার করে গত ১৫ জুন থেকে শুরু হয়েছিল সামুদ্রিক মৎস্য শিকার। শুরু থেকেই অন্যান্য মাছ ভালো ধরা পড়লেও দেখা মিলছিল না ইলিশের।
ডায়মন্ড হারবারে দেদার ইলিশ উঠলেও বিস্মৃতিতে ভুগছিলেন দিঘা, শংকরপুর, জুনপুট, শৌলা, পেটুয়ার মৎস্যজীবীরা। সেই কারণেই এখন আশা করছেন সাগরে ভালো ইলিশ ধরা পড়ার। সূত্রের খবর, নিম্নচাপের কারণে সমুদ্র অশান্ত হয়ে ওঠায় ১৯-২২ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে মৎস্য শিকারে। সমুদ্র থেকে ফিরে বিভিন্ন ঘাটে এসে ভিড়েছে লঞ্চ-ট্রলারগুলি। তাদেরই জালে জড়ানো ইলিশ, যা নিলাম হয়েছে গত দু’দিনে।
দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘সমুদ্র উত্তাল থাকায় প্রায় সমস্ত লঞ্চ-ট্রলার ঘাটে ফিরে এসেছে। গত দু’দিন ধরে ফিরে আসা প্রায় সমস্ত লঞ্চ-ট্রলারগুলিতে কমবেশি ইলিশ উঠেছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৬ টন মতো হবে। মরশুমে এই প্রথম এই পরিমাণ ইলিশ দিঘা মোহনার পাইকারি বাজারে৷’’
দিঘা মোহনার বাজারে ১৬০০-১৭০০ টাকা প্রতি কেজি মূল্যে বিক্রি হয়েছে এক কেজি কিংবা তারও বেশি ওজনের ইলিশ মাছ। ৭০০- ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ দাম পেয়েছে ১১০০-১২০০ টাকা। ৪০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দামও ছিল আগুন ছোঁয়া। কেজি প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। যা মধ্যবিত্ত বাঙালির সাধ্যের বাইরে।
স্থানীয় আড়ৎদার তথা দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান নবকুমার পয়ড়্যা বলেন, ‘‘এই যৎকিঞ্চিৎ পরিমাণ ইলিশ দিয়ে বাঙালির মৎস্য বিলাস পূরণ হওয়ার নয়। দিঘা মোহনার মতো পাইকারি বাজারে অনন্ত ৫০-৬০ টন উঠলেই বাংলার সব প্রান্তে ইলিশ পৌঁছানো সম্ভব। একমাত্র প্রকৃতি সহায় হলে অর্থাৎ আবহাওয়া এমন বর্ষামুখর থাকলেই তা সম্ভব৷’’