কাঁথি: স্বাস্থ্যবিধি এবং নিয়ম না মেনেই খাবার প্রস্তুত ও বিক্রি করার অভিযোগ উঠল কাঁথির দুটি ফাস্টফুড সংস্থার বিরুদ্ধে। দুটি খাবার প্রস্তুতকারক সংস্থার কারাখানার ছবি খুবই ভয়ংকর। ক্রেতার অভিযোগ ও কাঁথি (Kanthi) পুরসভায় উপ-পুরপ্রধানের সরজমিন খতিয়ে দেখার পরও এখনও রমরমিয়ে খাবার বিক্রি করছেন কাঁথির এই দুটি ফাস্ট ফুড সংস্থা। তবে কি দুটি খাবার সংস্থার মাথায় প্রভাবশালী ব্যক্তির হাত রয়েছে? সেই কারণে কি স্বাস্থ্যবিধি ও নিয়ম না মেনেও খাবার বিক্রি করে যাচ্ছেন সংস্থা দুটি? ফুড সেফটি ইন্সপেক্টর দুটি সংস্থায় অভিযান চালাচ্ছেন না কেন? এরকমই একাধিক প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষের মনে।
সূত্রের খবর, কাঁথি (Kanthi) শহরে দুটি ফাস্টফুড খাবার প্রস্তুত কারক সংস্থা ‘পুষ্টি’ এবং ‘টেস্টি’। কাঁথিতে অবস্থিত এই দুটি ফাস্টফুড সংস্থা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে একাধিক খাওয়ার তৈরি করেন। এই সংস্থার খাবার শুধু কাঁথিতেই নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন ছোট বড় দোকানেও বিক্রি হয়। কিন্তু এই সংস্থা দুটি স্বাস্থ্যবিধি ও নিয়ম না মানে খাবার প্রস্তুত করছেন। সাম্প্রতি কাঁথির এক বাসিন্দা পাউরুটি কেনার পর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। সমস্ত জালিয়াতি চক্রের পর্দাফাঁস হয়ে যায়।
এই বিষয়ে কাঁথি (Kanthi) শহরের এক বাসিন্দা ‘পুষ্টি’ নামক সংস্থার থেকে একটি পাউরুটি কিনে নিয়ে যান। কিন্তু পাউরুটিটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও তা দোকানে বিক্রি করছে। রুটিতে কোন ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট লেখা নেই, কিন্তু এক্সপায়ার ডেট লেখা রয়েছে। এই ঘটনার পরই ওই পাউরুটিটি নিয়ে ওই বাসিন্দা কাঁথি পুরসভা ১২ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ‘পুষ্টি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এ যান। সেখানেই ‘পুষ্টি’ সংস্থার কর্ণধার জানিয়ে দেন, তাদের কোন ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট লেখা হয় না।
ক্রেতার অভিযোগ পাওয়ার পর তৎক্ষণাৎ ‘পুষ্টি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামক সংস্থায় চলে আসেন কাঁথি (Kanthi) পুরসভার উপ-পুরপ্রধান নিরঞ্জন মান্না। ক্রেতার কাছে অভিযোগ পাওয়ার পরই ‘পুষ্টি’ নামক সংস্থার কারখানার ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে সরজমিনে যান তিনি। আর সেখানেই দেখেন স্বাস্থ্যবিধি ও নিয়ম না মেনেই তৈরি করা হচ্ছে খাওয়ার।
কাঁথি (Kanthi) পুরসভার উপ-পুরপ্রধান বলেন, “কর্মীরা গ্লাভস ছাড়া খালি হাতেই কাজ করছেন, মুখে মাস্ক নেই ও মাথার চুলও ঢাকা নেই। শুধু তাই নয় নোংরা গামছা দিয়ে হাত মুছে খাওয়ার প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রচুর কেক ও পাউরুটি আঢাকা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া পাউরুটি ও কারখানার ভেতরে জমিয়ে রাখা হয়েছে।” এরপরই উল্টোদিকে ‘টেস্টি’ নামক খাবার প্রস্তুতকারক সংস্থা যান তিনি। সেখানেও দেখা যায় একই চিত্র।
কাঁথি পুরসভার উপ-পুরপ্রধান নিরঞ্জন মান্না বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর খুবই খারাপ লাগছে। রুটিতে কোন ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট দেওয়া নেই। কোন এক্সপায়ার ডেটও নেই। সাধারণ মানুষ এমনকি কোনো শিশুরা খেলে বিপদে ঝুঁকি বাড়তে পারে। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দুটি সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”