
আসানসোল: সপ্তাহ খানেক আগে বঙ্গ সফরে এসেছিলেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আগামী সপ্তাহে ফের তাঁর এই রাজ্যে আসার কথা আছে। অমিতের বঙ্গে সফরের আগে ফের কয়লা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই কয়লা পাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে বিশেষ গতি পেয়েছিল অমিত শাহের পূর্ববর্তী বঙ্গ সফরের সময়ে।
আরও পড়ুন- ভোটে প্রভাব ফেলবে অবৈধ কয়লা-গরু পাচার বিরোধী কেন্দ্রীয় অভিযান: দিলীপ
কয়লা পাচার নিয়ে একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে সপ্তাহ খানেক আগে। সেই তদন্তে বহু প্রভাবশালী নেতাদের নাম জড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ইসিএল আধিকারিকদের নামও জড়িয়েছে সেই ঘটনায়। বেশ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। ওই কয়লা পাচারচক্রের মূল পাণ্ডা অনুপ মাঝি ওরফে লালার নামে লুকআউট নোটিশও জারি করে হয়েছে।।
গত কয়েক সপ্তাহ আসানসোল-রাণিগঞ্জ লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে ইডি-সিবিআই। সেই সঙ্গে আয়কর দফতরের কর্তাদেরকেও অভিযানে সামিল হতে দেখা গিয়েছিল। সেই ধারা বজায় রেখেছে এবার কয়লার ডিপোতে নোটিশ পাঠাল সিবিআই। ওই ডিপোর আধিকারিকদের বর্ধমানের শীতলপুরে অবস্থিত ইসিএল গেস্ট হাউসে দেখা করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- কয়লা কাণ্ডে রাজ্যের ৩০টি জায়গায় তল্লাশি চালাল সিবিআই
কয়লা উত্তোলনের পরে প্রথমে তা একটি খোলা জায়গায় রাখা হয়। সেই জায়গাটিকে ডিপো বলা হয়। সেখান থেকে ট্রাকে করে অন্যত্র পাচার করা হয় কয়লা। সেই ট্রাকে করেই অবৈধ উপায়ে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হয়। সেই ট্রাকে করে কয়লা পাচারের জন্য ওই ডিপো থেকে নথি নিতে হয়। যা প্যাড নামে পরিচিত। সেই প্যাড দেখালে রাস্তায় পুলিশ কোনও ঝামেলা করে না।
খনি থেকে উত্তোলনের পর বিভিন্ন ধাপে তা পাচার হয়ে অবৈধ উপায়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছায়। কয়লা পাচারের মোট ১২ট পর্যায় রয়েছে। যার মধ্যে দশম পর্যায় হচ্ছে এই ডিপো। সেখানে পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর বাকি রয়েছে দুই ধাপ। সেখানে পৌঁছে গেলেই কয়লার অবৈধ কারবারে যবনিকা পরে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সমগ্র প্রক্রিয়ার কয়লা খনি সংলগ্ন একটি জেলার প্রশাসনিক প্রধান প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত আছেন বলেও জানা গিয়েছে সূত্র মারফত। তার উপরেও নজর চালাচ্ছে সিবিআই।
আরও পড়ুন- গরু-কয়লা পাচারের অভিযোগে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে পাকড়াও তৃণমূলনেতা-সহ ২
কয়লা পাচারের দশম পর্যায় ডিপোতে লালার হয়ে ওই কাজ পরিচালনা করছিল রাজেশ ওরফে রাকেশ শর্মা। এদের সঙ্গে আরও একজন রয়েছে। সুশীল নামক ওই জনৈক ব্যক্তি ট্রাক এবং প্যাড প্রক্রিয়া পরিচালনা করেন। রাজেশ এবং সুশীলের মধ্যে আবার একটি আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। এরাই প্রভাব খাটিয়ে কয়লা সম্পর্কিত যাবতীয় অবৈধ ক্রিয়াকলাপ পরিচালনা করে বলে জানা গিয়েছে সূত্র মারফত। এই সকল ব্যক্তির উপরেই নজর রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার। যাদের পাকড়াও করতে আসরে নেমেছে সিবিআই।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে যে অমিত শাহের বঙ্গ সফরের আগে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা তৎপর হয়েছে। যা নিয়ে অন্য রাজনৈতিক গন্ধ পাচ্ছে বিভিন্ন মহল। আরও বড় বিষয় হচ্ছে এর আগে রাজ্য পুলিশকে না জানিয়েই এই প্রকারের অভিযান চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা।