খাসডেস্ক: আর জি করের (R G KAR) ঘটনায় জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মতো সরতে হচ্ছে সিপি বিনীত গোয়েল, রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে বসেছিল দুই পক্ষের বৈঠক। বৈঠক শেষে দুই পক্ষই দাবি মানার কথা জানিয়েছে। আর জি করের ঘটনার শুরু থেকেই পুলিশ কর্তা বিনীত গোয়েলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। জুনিয়র চিকিৎসকরা দাবি করেছিলেন অবিলম্বে ইস্তফা দিক বিনীত গোয়েল। কলকাতা পুলিশের সিপির পদত্যাগের দাবিতে লালবাজারও অভিযান করেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: ‘সদর্থক’ বৈঠকেও কড়া অবস্থান জুনিয়র চিকিৎসকদের, বৈঠক শেষে আরও এক ‘শর্ত’
দুর্নীতির বড় সিন্ডিকেট চলছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে। আর এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যভবনের ছোট থেকে বড় কর্তারা। এই অভিযোগ তুলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে সরানোর দাবি জানান আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। সোমবার সেই দাবিতেও মান্যতা দেয় রাজ্য। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নিয়েছি। আর কী করব!’’ তিনি জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের পাঁচটি দাবির প্রথমটি সিবিআই এবং আদালতের বিষয়। বাকি চারটের মধ্যে তিনটেয় মান্যতা দিয়েছে তাঁর সরকার। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরানো হবে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টের পর এই সংক্রান্ত নোটিস দিয়ে দেওয়া হবে।চিকিৎসকদের দাবি মেনে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) অভিষেক গুপ্তকেও সরানো হচ্ছে। তৃণমূল সুপ্রিমো তথা নেত্রী বলেন, ‘‘আমরা কাউকে অশ্রদ্ধা, অসম্মান করিনি। কিন্তু ওঁদের বিরুদ্ধে যে হেতু চিকিৎসকদের ক্ষোভ আছে, বলেছেন, ওঁদের উপর আস্থা নেই, তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
আরও পড়ুন: টালা থানার প্রাক্তন ওসির বাড়িতে গেলেন লালবাজারের কর্তারা
অন্যদিকে আর জি করের (R G KAR) ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সটান স্বাস্থ্যভবনের সামনে বিক্ষোভস্থলে পৌঁছে যান আন্দোলনকারীরা। সেখানে তাঁরা দাবি করেন, আন্দোলনকারীদের কাছে নতি স্বীকার করল রাজ্য সরকার। ৩৮ দিন পর জয় এল। এই জয় চিকিৎসক, নার্স ও সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষেরও। সেই সঙ্গে তাঁরা জানিয়ে দেন, আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত ধর্না, বিক্ষোভ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। দুই পক্ষের বৈঠক ও মতামত সামনে আসার পর সমাজমাধ্যমে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (SUVENDU ADHIKARY) লেখেন, ‘‘বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে বোঝা যাচ্ছে, অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। তবে যা-ই হোক, ন্যায়বিচারের জন্য শুধুমাত্র কয়েক জনের বদলি যথেষ্ট হবে না। প্রমাণ লোপাটে যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন, তাঁদের জেলে যেতে হবে।’’ দুইপক্ষের মধ্যে কিছুটা জট কাটলেও আপাতত সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ।