কলকাতা: ‘আজকের ভারতে ভিন্নমত দেশদ্রোহী তকমা’ শীর্ষক বিতর্ক সভায় অংশগ্রহণ করে আগাগোড়া কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করে গেলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর প্রতিপক্ষ ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাই এই বিতর্ক সভা নিয়ে পারদ এমনিতেই চড়ে ছিল। তবে নাম থাকা সত্ত্বেও এদিনের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন দিলীপবাবু। তাঁকে ছাড়া সভাতেই একাধিক ইস্যুতে বিজেপিকে কোণঠাসা করতে থাকেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ।
এদিনের সভায় উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। তাঁর প্রশ্ন, তাঁরা চিড়ে খান কি না, বিরিয়ানি পছন্দ করেন কি না, ফুড ডেলিভারি বয়ের বা অ্যাপ ক্যাবের চালকের ধর্ম সম্পর্কে জানতে চান কি না? কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, দেশের জনগণ কী খাবে, কী পরবে সেটা ঠিক করে দেওয়াটা জাতীয়তাবাদ নয়, দেশপ্রেমও নয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতাই আসল জাতীয়তাবাদ।
অভিষেকের মতে, বিরোধীদের জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞার থেকে তাঁদের চিন্তাধারা আলাদা। নাম না করে তিনি বলেন, গেরুয়া শিবিরের কাছে ক্ষমতার লোভ হচ্ছে তাদের দেশপ্রেম, আর তাঁর কাছে গঠনমূলক, উন্নয়নমূলক কাজই দেশভক্তি। হিংসা-বিদ্বেষ-বিভাজনকে হাতিয়ার করছে বিরোধীরা। আর অভিষেকরা চাইছেন উন্নয়ন।
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ব্যক্তি স্বাধীনতা, বাগস্বাধীনতাই তাঁর কাছে জাতীয়তাবাদ। তিনি বলেন, আজ বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে কষ্ট পেতেন, যে তাঁদের উক্তির কীভাবে অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
এদিনের বক্তব্যে বাদ যায়নি দিল্লির নির্বাচনের কথাও। তিনি বলেন, দিল্লির রাস্তায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উদ্ধত্যমূলক মন্তব্যের জবাব ইভিএম-এ দিয়েছেন স্বরা ভাস্করের মতো দিল্লিবাসী। এমন একটা দেশে বাস করছি, যেখানে একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে জঙ্গি আখ্যা দিয়ে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে”।
বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, তাঁদের কাছে বাগস্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতাই দেশপ্রেম। এখনই এই স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে হবে।