কলকাতা: একের পর এক উইকেট পড়ছে বিজেপিতে। তাই নিয়েই প্রবল চাপে গেরুয়া শিবির। শনিবারেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে দল ছেড়েছেন নেতা তথা অভিনেতা জয় জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। জয়ের দল ছাড়ার পরেই এবার বিজেপির অন্দরের তথ্য ফাঁস করেছেন BJP-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ উগড়ে দল ছাড়ার জন্য বাংলার দলীয় নেতৃত্বের একাংশকেই দায়ী করেছেন রাহুল। এতেই কার্যত অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।
জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ছাড়ার পিছনে দলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বলেই দাবি করেছেন রাহুল। জয়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, “জয়কে দলে এনেছিলাম আমি। কিন্তু ওর সঙ্গে দলের যতটা সম্পর্ক থাকা দরকার ছিল, ওর পাশে যতটা আমাদের দাঁড়ানোর দরকার ছিল, তা আমরা করতে পারিনি। ওর মধ্যে রাজনৈতিক হতাশা আছে, শারীরিক হতাশা আছে, আর্থিকভাবে হতাশা আছে, পারবারিকভাবেও হতাশা আছে। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে এই কোনও বিষয়ে ওঁর পাশে দাঁড়ানো হয়নি। আমার সঙ্গে ওর ব্যক্তিগত যোগাযোগ থাকলেও দলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ক্ষীণ। আর একা মানুষকে ভুল বোঝানোর লোকের অভাব হয় না।”
উল্লেখ্য, জয় বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুল সিনহার হাত ধরেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। এমনকি জয়কে করা হয়েছিল বিজেপি-র জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য । কিন্তু রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি যাওয়া পর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তখন থেকেই বাড়ছিল অসন্তোষ। বিজেপির এই ধরনের কাজে শুধু জয় নয় আরও অনেকেই অসন্তুষ্ট বলে দাবি করেছেন রাহুল। এমনকি বিজেপির নেতাদের সঙ্গে শীর্ষ নেতাদের যোগাযোগের অভাব রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন রাহুল সিনহা। সূত্রের খবর, চিঠিতে নিজের সে সব ক্ষোভের কথা উগড়ে দিয়েছেন জয়৷ এমনকি চিকিৎসার জন্য দলের কাছে সাহায্য প্রার্থনা চেয়েও তিনি কোনও সাড়া পাননি বলে চিঠিতে নিজের অভিমান প্রকাশ করেছেন তিনি৷ এমনকী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করার সময় চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ৷ শনিবার মোদীকে লেখা দীপাবলির শুভেচ্ছা চিঠিতে এসব উল্লেখ করেই নিজের দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন তিনি৷
একের পর এক বিজেপি নেতা দল ছাড়ছেন সেই সঙ্গে শীর্ষ নেতা যেমন দিলীপ ঘোষ ও তথাগত রায়ের বাক যুদ্ধ প্রকাশ্যে। সব মিলিয়ে বিজেপির অন্দরের যে সমস্যা রয়েছে তা দিনে দিনে আরও প্রকট হয়ে উঠছে। এই লক্ষণ যে পদ্ম শিবিরের জন্য মোটেই সুখকর নয় তা স্পষ্ট কথাতেই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।