কোচবিহার ও কলকাতা: ২৯৪ আসনের বিধানসভায় সরকার গড়তে প্রয়োজন ১৪৮টি আসন৷ তবু কেন জেলায় জেলায় জনসমাবেশ থেকে তিনি সরকার গঠনের জন্য নুন্যতম ২০০টি আসন পাওয়ার কথা বলছেন, বুধবার কোচবিহারের জনসভা থেকে দলীয় কর্মী এবং সাধারণ মানুষের কাছে তার ব্যাখ্যা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বললেন, ‘‘আমাদের মিনিমাম ২০০টা আসন পেতেই হবে৷ তা না হলে ভোটের পরও বিজেপি টাকা খাইয়ে কিছু গদ্দারকে আবার কিনে নেবে!’’
আরও পড়ুন: west bengal assembly election 2021 সাম্প্রদায়িক প্রচার ইস্যুতে কমিশনের কাঠগড়ায় মমতা
স্বভাবতই মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ফের শুরু হয়েছে জল্পনা৷ কারণ, দলের ভেতরে এখনও যে গদ্দারদের ‘বাসা’ রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের বক্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ ওই মহলের মতে, গত বছরের ডিসেম্বরে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে শুরু হওয়া দলবদলের রাজনীতির জেরে তৃণমূলে অন্দরে ভাঙন ধরেছিল৷ বর্তমানে সেই ধারা বন্ধ থাকলেও ফল প্রকাশের পর তা যে আবার শুরু হবে ইতিমধ্যে মোদী থেকে শাহ এমনকি শুভেন্দু অধিকারীও নিজের বক্তব্যে একাধিকবার সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ দেরিতে হলেও স্বয়ং তৃণমূলনেত্রী বিরোধী শিবিরের সেই ইঙ্গিতকে মান্যতা দিলেন বলেই মনে করছে ওই মহল৷
আরও পড়ুন: west bengal assembly election 2021 কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্যের কৈফিয়ৎ চাইল কমিশন
যদিও বিজেপির একাংশের দাবি, তৃণমূল দলটার এখন কার্যত তাসের ঘরের মতো অবস্থা৷ যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে বিধানসভা ফল প্রকাশের পর তাও শেষ হয়ে যাবে৷ একথাটা তৃণমূল নেত্রী নিজেও বুঝতে পারছেন৷ ফলে মানুষের সহানুভূতি আদায়ের জন্য উনি এসব কথা বলছেন৷ গেরুয়া শিবিরের দাবি, তৃণমূলে কাজ করার পরিবেশ নেই৷ দলের ভিতরে সকলের দম বন্ধ হয়ে আসছে৷ তাই টাকার বিনিময়ে নয়, যাঁরা মানুষের সেবা করতে চান তাঁরা স্বেচ্ছায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছেন৷
প্রসঙ্গত, এদিন কোচবিহারের জনসভা থেকে মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি একা জিতে তো লাভ নেই। আমরা ভোট হয়ে গিয়েছে। আমি যেখানে দাঁড়াব সেখানেই জিতব। আমি এখানে দাঁড়ালে এখানেও জিততাম। আপনারাই আমাকে ভোট দিয়ে দিতেন। কিন্তু ২৯৪ এরর মধ্যে মিনিমাম আমার ২০০ চাই। না হলে বিজেপি টাকা খাইয়ে কিছু গদ্দারকে আবার কিনে নেবে।’’
স্বভাবতই, দলের অন্দরে ফের গুঞ্জন উঠেছে, গদ্দার চিহ্নিত করণের উপায় কি! অগত্যা, দলনেত্রীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দলের অন্দরে ফের মাথা চাড়া দিতে পারে অবিশ্বাসের চোরাস্রোত- মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের৷