
কলকাতা: একুশের কঠিন সময় অতিক্রম করার পর থেকেই দলের অন্দরে বেনোজল দূর করতে বারে বারে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে৷ এমনকি, বর্ষীয়ানদের বাধা উড়িয়ে দলের অন্দরে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতিও চালু হয়েছে তাঁর হাত ধরেই৷ ২১ জুলাইয়ের ধর্মতলার মঞ্চ থেকে তিনি নতুন তৃণমূলের ডাক দিয়েছিলেন৷ তারই বাস্তবায়ন কি কলকাতা জুড়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সম্বলিত হাজারও হোর্ডিং? নাকি দুর্নীতি ইস্যুতে বেকায়দায় পড়া দলের ভাবমূর্তি ফেরাতে ‘নকলি সাইনবোর্ড, পাবলিক ধোঁকা’র কৌশল? মঙ্গলবার রাত থেকেই এই নিয়ে জল্পনা চড়ছে রাজনৈতিক মহলে৷
বস্তুত, দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে নতুন তৃণমূলের নামে পড়া হোর্ডিংয়ে লেখা হয়েছে, ‘আগামী ছয় মাসের মধ্যে সামনে আসবে নতুন তৃণমূল।ঠিক যেমন সাধারণ মানুষ চায়।’ অন্যদিকে সাম্প্রতিক অতীতে সামনে এসেছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ৷ ইতিমধ্যে নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় জেল হাজতে যেতে হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে৷ অন্যদিকে সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন দলের বীরভূমের দোর্দন্ডপ্রতাপ জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ স্বভাবতই, দুটি বিষয়কে অনেকে মিলিয়ে সহজেই দুয়ে দুয়ে চারের অঙ্ক করে ফেলছেন৷ তাঁদের মতে, বছর ঘুরলেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন৷ সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কি মানুষের মধ্যে তৃণমূল সম্পর্কে তৈরি হওয়া বিতৃষ্ণা দূর করতেই এই কৌশল?
ঘটনাচক্রে অভিষেকের নামাঙ্কিত এই পোস্টারকে ঘিরে ২৪ ঘণ্টা পরেও দলের তরফে বিশেষ কোনও প্রতিক্রিয়া সামনে আসেনি৷ দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সতর্ক জবাব, ‘‘ওই হোর্ডিং তো দলের নয়। উৎসাহী কেউ করে থাকতে পারেন।’’ এদিকে চোখের চিকিৎসা করাতে রবিবার থেকে দুবাইয়ে রয়েছেন অভিষেক৷ শুক্রবার কলকাতায় ফেরার কথা তাঁর৷ স্বভাবতই, অভিষেকের ফেরার দিকে তাকিয়ে নেতা, কর্মীরাও৷ তাঁদের মতে, কোনও উদ্দেশ্যে ছাড়া তো এমন পোস্টার নয়৷ দুবাই থেকে ফিরে এই বিষয়ে অভিষেক নিশ্চয়ই স্পষ্ট কোনও বার্তা সামনে আনবেন বলেই মনে করছে ওই মহল৷ সূত্রের খবর, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের চিহ্নিত করতে ইতিমধ্যে অভিষেকের ‘টিম’ কাজেও নেমে পড়েছে৷ সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোটের আগে একাধিক নেতার কপালে শনি নাচার সম্ভবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না৷ যদিও ঘটনাপ্রবাহ দেখে রাজনৈতিক মহলের অভিমত, সবটাই হচ্ছে ভোটের কথা মাথায় রেখে৷
আরও পড়ুন: এবার উদয়ন গুহর বিরুদ্ধে ৩০ কোটির সার কেলেঙ্কারির অভিযোগ দিলীপের