বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: আজও আমরা সত্যিকারের প্রেমের কথা বলতে গেলে সবার আগে উদাহরণ টানি রাধাকৃষ্ণের। যুগলের জুটি অমর, সেইসঙ্গে অপ্রতীম। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে খুব স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে এক মহাগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। রাধাকৃষ্ণ যখন এক প্রাণ এক আত্মা, তাহলে উভয়ের বিয়ে হল না কেন? কেন শ্রীরাধিকা কৃষ্ণকে ছেড়ে আয়ান ঘোষকে বিয়ে করলেন?
আরও পড়ুন: কালী থেকে গৌরীতে রূপান্তর, কৌশিকী অমাবস্যা নামের নেপথ্যে যে রহস্য
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাধার অস্তিত্ব শুধুমাত্র ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণেই আছে। আর কোথাও নেই। বিষ্ণু পুরাণ, ভাগবত পুরাণ, এমনকি মহাভারতেও না! আর ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনেক পরে রচিত হয়েছে। সুতরাং, বৈষ্ণবেরা যতই ভক্তিরসে গদগদ হোন না কেন, রাধা চরিত্রটি আদতেই গ্রহণযোগ্য কিনা, এ বিষয়টি রীতিমত ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। সেই রাধার আবার বিয়ে!
বলাই বাহুল্য, এ বিষয়ে যে ব্যখ্যাই দেওয়া যাক না কেন, তা তর্কসাপেক্ষ। তবু এরই মধ্যে একটি বহুল প্রচলিত ধারণা রয়েছে। এই ধারণা অনুসারে, শ্রীরাধিকার স্বামী আয়ান ঘোষ পূর্বজন্মে একজন তপস্বী ছিলেন। যিনি কঠোর তপস্যা করেন বিষ্ণুকে তুষ্ট করেছিলেন। কিন্তু এরপর বিষ্ণু যখন তাঁকে বর প্রার্থনা করতে বলেন, তখন আয়ান বলেন, “আমি আপনার প্রিয়াকে স্ত্রী হিসেবে লাভ করতে চাই।” বলাই বাহুল্য, বিষ্ণু একবারে তাঁর সে প্রার্থনা পূরণ করেননি।
তখন আরও কঠোর তপস্যায় বসেন আয়ান। এবার ফল মিলল। ভগবানকে তাঁর ডাকে সাড়া দিতেই হয়। তবে ভগবান শর্তও দিলেন। আয়ানকে তিনি বলেন, “তুমি পরজনমে আমার প্রিয়াকে নিজ ভার্যারূপে পাবে ঠিকই কিন্তু তুমি হবে নপুংসক।” শেষমেশ তাই হল। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ এবং বৈষ্ণব পদাবলী মতে, শ্রীলক্ষ্মী রাধা হয়ে জন্মগ্রহণ করলে আয়ান ঘোষ তাঁর স্বামী হলেন। কিন্তু ভগবানের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী তাঁকে নপুংসক হতে হল।
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/
এই কারণেই রাধাকৃষ্ণ দাম্পত্যের জুটি বাঁধতে পারেননি। উল্লেখ্য, আয়ান ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের পালিকা মা যশোদার তুতো ভাই। অর্থাৎ সম্পর্কে কৃষ্ণের মামা। এও বলা হয়, কৃষ্ণের পালক পিতা নন্দরাজই নাকি রাধা আর আয়ান ঘোষের বিবাহের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন।