বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: মহালয়াতেই কার্যত সূচনা বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসবের। ফলে একাধিক মানুষের ধারণা, মহালয়া থেকেই বুঝি দেবীপক্ষ শুরু হয়ে যায়। সে কারণেই মহালয়ার আগে “শুভ” শব্দটি জুড়ে দেন তাঁরা। কিন্তু তথ্যটি একেবারেই ঠিক নয়। দেবীপক্ষের সূচনা মহালয়ায় নয়। দেবীপক্ষ শুরু হয় ঠিক পরের তিথি প্রতিপদ থেকে। মহালয়ায় আসলে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটে। অমাবস্যা। এবং সর্বোপরি দিনটিকে কোনওমতেই শুভ বলার উপায় নেই।
আরও পড়ুন: কালী থেকে গৌরীতে রূপান্তর, কৌশিকী অমাবস্যা নামের নেপথ্যে যে রহস্য
কেন জানেন? মৃত্যুর পর মহাভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কর্ণ যখন স্বর্গে গেলেন, তাঁকে খাদ্য হিসেবে সোনাদানা জহরত দেওয়া হয়েছিল। কর্ণ তো তা দেখে একেবারে থ। এসব আবার কেউ খায় নাকি? তখন তাঁকে জানানো হয়, তিনি সারাজীবন অপরকে ধনরত্নই কেবল দান করে গিয়েছেন। কখনও পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে কোনও প্রকার খাদ্য বা পানীয় দান করেননি। এরই ফলশ্রুতিতে তাঁকে খাদ্য বা পানীয়র পরিবর্তে সোনাদানা দেওয়া হয়েছে।
কর্ণ পড়লেন আরও ফাঁপড়ে। বললেন, মৃত্যুর মাত্র দিনকয়েক আগেই তিনি নিজের পিতৃপুরুষের নাম জানতে পেরেছেন। ফলে তাঁর তো কোনও দোষ নেই। সে কথা শুনে যমও বুঝতে পারলেন, ঠিকই তো। কর্ণের দোষ কোথায় এখানে? তখন তিনি কর্ণকে বলেন, কর্ণ যেন একদিনের জন্য পৃথিবীতে ফিরে গিয়ে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন। এতেই তাঁর দোষ কেটে যাবে।
পিতৃপক্ষের অমবস্যাই হল সেই দিন। যদিও এছাড়া আরও একটি ব্যখ্যা রয়েছে। পুরাণ মতে, রাবণ-বধের নিমিত্ত শ্রীরামচন্দ্র অকাল বোধন করেছিলেন। সে তার আগে এই তিথিতে তিনি পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন। আর সেই থেকেই মহালয়ার ভোরে মৃত পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার রেওয়াজ।
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/
কোনটি ঠিক আর কোনটি ভুল, বলা শক্ত। তবে সনাতন বিশ্বাস অনুযায়ী, দিনটিতে পরলোকগত আত্মাদের মর্ত্যে নিয়ে আসা হয়। এতে সমস্ত আত্মার যে সমাবেশ ঘটে, তাকেই বলে “মহালয়া”। তাহলে নিজেরাই বলুুন, এমন দিনকে কি শুভ বলার জো আছে?