শিবের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ: কোথায় কোথায় জানেন কি

0
69

বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: হিন্দুশাস্ত্রে ভারতবর্ষে শিবের মোট ৬৪টি জ্যোতির্লিঙ্গে’র কথা শোনা যায়। তবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং একাধিক আক্রমণের ফলে এই মুহূর্তে এদেশে মাত্র ১২টি জোতির্লিঙ্গ-ই টিকে রয়েছে। আজ আমরা তাঁদের সম্বন্ধেই জেনে নেব।

(১) সোমনাথ: এটি গুজরাতে অবস্থিত। মুসলিম শাসক তথা বৈদেশিক শক্তির আক্রমণে একাধিকবার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে এই মন্দির। অতঃপর নতুন মন্দির নির্মিত হয়। এর কাছাকাছি প্রভাস তীর্থ, শ্রীকৃষ্ণের অন্তর্ধান স্থান, শঙ্করাচার্যের মন্দির ইত্যাদি রয়েছে।

- Advertisement -

(২) মল্লিকার্জুন: অন্ধ্রপ্রদেশের তুর্ণুল জেলায় শ্রীশৈলম নামক স্থানে অবস্থিত। পাহাড়ঘেরা মন্দির। সামনেই কৃষ্ণা নদী। মহাশিবরাত্রিতে ভিড় হয় চোখে পড়ার মত।

আরও পড়ুন: Ram navami 2023: মা দুর্গার সঙ্গে রামের কৃপায় এই রাশি জাতকদের জীবনে আসবে সৌভাগ্য

(৩) মহাকাল: এই মন্দির মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়নীতে শিপ্রা নদীর পাড়ে। মূল মন্দির মাটির নীচে‌। ওপরে ওংকারেশ্বর শিবমন্দির। কথিত রয়েছে, রামচন্দ্র এখানেই পিতা দশরথের উদ্দেশ্যে পিণ্ডদান করেছিলেন।

(৪) কেদারনাথ: এই তীর্থের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। ৩৫৮৪ মিটার উচ্চতায় হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই মন্দির। উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল জেলায়। পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে মন্দাকিনী। শঙ্করাচার্যের সমাধি এখানেই রয়েছে। ২০১৩ -র হরপা বানে বাকী সবকিছু ভেসে গেলেও আশ্চর্যভাবে রক্ষা পায় কেদারনাথ মন্দির। সেই দুঃস্বপ্ন আজও মানুষের মনে।

(৫) ওংকারেশ্বর: মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে বাসে ৭৭ কিলোমিটার। নর্মদা নদীর মধ্যে দ্বীপ। দ্বীপের বিপরীতে মন্দির। এই স্থানেই নাকী দীক্ষা এবং সিদ্ধিলাভ করেন শঙ্করাচার্য।

‌(৬) ভীমাশঙ্কর: মহারাষ্ট্রে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ওপরে ভীম নদীর তীরে অবস্থিত এই মন্দির। কালো পাথরের ছোট্ট শিবলিঙ্গ। ঔরঙ্গাবাদ থেকে ২৩০ কিলোমিটার এবং পুনে থেকে ১২৩ কিলোমিটার দূরে। গুরু গোবিন্দ সিংয়ের স্মৃতিবিজড়িত নানডেডও খুব দূরে নয়। মাত্র ১০৯ কিমি।

(৭) নাগেশ্বর: এটিও গুজরাতে অবস্থিত। এবং সোমনাথের অতি নিকটে। দ্বারকা থেকে ওখার পথে মাত্র ১৭ কিলোমিটার। মহাদেব এখানে নাগেশ্বর অর্থাৎ সাপেদের আরাধ্য রূপে পূজিত হন।

(৮) বিশ্বনাথ: এনার সম্বন্ধেও নতুন করে কিছু বলার দরকার পড়ে না। কাশী দেবাদিদেবের নিজের আলয়। কোনও কোনও মতে তো কৈলাসে নয়, বরং কাশীতেই আসলে বাস ভোলানাথের। অন্যদিকে শুধু বিশ্বনাথ নয়, শিব এখানে ‘বিশ্বেশ্বর’ নামেও খ্যাত। মোগল সম্রাট আকবরের আমলে তাঁর রাজস্ব দফতরের মন্ত্রী টোডরামল এই মন্দির সংস্কার করেন। ১৭৮৬ সালে হোলকারের মহারাণী অহল্যাবাঈ মন্দিরের চূড়া সোনা দিয়ে মুড়ে দেন।

(৯) বৈজনাথ: কথিত, পঞ্চপান্ডব এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহারাষ্ট্রের প্যারলে অবস্থিত ৮০৪ বছরের প্রাচীন মন্দির। ঔরঙ্গাবাদ থেকে ১৩০ কিলোমিটার।

(১০) রামেশ্বরম: শুধু দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতমই নয়, চার ধামের এক ধামও বটে। মূর্তিটি নাকী স্বয়ং সীতাদেবী গড়েছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীরামচন্দ্র। ধনুষ্কোডি থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের সঙ্গমস্থলে অবস্থিত এই মন্দির। পক প্রণালীতে।

খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/

(১১) ঘৃষ্ণেশ্বর: মহারাষ্ট্রের বিখ্যাত ইলোরা গুহা অতি নিকটে। মাত্র ১ কিলোমিটার। অন্যদিকে ঔরঙ্গাবাদ থেকেও মাত্র ২৮ কিমি। দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম এই ঘৃষ্ণেশ্বর।

(১২) ত্র্যম্বকেশ্বর: মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে। মূলতঃ বিখ্যাত কুম্ভমেলার জন্য। প্রতি ১২ বছর অন্তর এই ত্র্যম্বকেশ্বরে পূর্ণকুম্ভ আয়োজিত হয়। মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত শিবমূর্তিরও বিশেষজ্ঞ রয়েছে। এখানে শিবমূর্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর, তিনের সমন্বয়েই গঠিত