
তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: ‘বাঘে ছুঁলে ১৮ ঘা, পুলিশে ছুঁলে ৩৬..’, প্রবাদ এখন ব্যাকডেটেড৷ লাঠির ঘা কিংবা নগদ জরিমানা নয়, বরং এখন পুলিশে ছুঁলে সামলাতে হচ্ছে দায়িত্ব! যেমন ক’দিন আগে ট্রাফিক আইন ভাঙার ‘শাস্তি’ হিসেবে রোদ্দুরের মধ্যে ট্রাফিক সামলানোর গুরু দায়িত্ব বর্তেছিল আইনভঙ্গকারীর ওপর৷ এবার হেলমেট না পরায় ট্রাফিক পুলিশের ইউনিফর্ম পরে ছাত্র-ছাত্রীদের ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’ লাইফ কর্মসূচির সঙ্গে পাঁচ কিমি পথ হাঁটতে হল যুবককে৷ রোদ্দুরে ঘেমে নেয়ে একসা হয়ে যুবকটি বারে বারে একটি কথায় বলছিলেন, ‘ভুলটা আমারই৷ বাড়ি থেকে বাজার যাচ্ছিলাম৷ হেলমেট পরে ছিলাম না৷ তবু ওরা কোনও ফাইন করেনি! জ্যাকেট পরিয়ে স্কুলের বাচ্চাদের সঙ্গে পাঁচ কিমি হাঁটাল!’’
লক্ষ্মীবারের বেলায় এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল বাঁকুড়ার কোতলপুর৷ আজ কোতুলপুরের গোপীনাথপুর সরোদবাসিনি হাইস্কুলে, ট্রাফিক ওসির নেতৃত্বে চলছিল ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচি’। তার ঠিক পাশেই চলছিল কোতুলপুর ট্রাফিক গার্ডের নেতৃত্বে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান। এদিন হেলমেটবিহীন এক মোটরসাইকেল আরোহীকে চোখে পড়ে কোতুলপুর ট্রাফিক গার্ডের কর্তব্যরত ওসি অলকেশ পতির। সেখানেই তার জন্য নির্দিষ্ট মূল্যের জরিমানা ধার্য না করে নিদান দিলেন অভিনব এক শাস্তির। শাস্তি স্বরূপ মিলল ট্রাফিক পুলিশের ইউনিফর্ম পরে, দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে ছাত্র-ছাত্রীদের ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ সম্পর্কে বোঝানোর গুরু দায়িত্ব!
গোপীনাথপুর সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত দে বলেন, ‘‘কীভাবে পথে চলতে হবে, কীভাবে অন্যের প্রাণ রক্ষা করা যাবে তা নিয়েও পুলিশের তরফ থেকে সতর্ক করা হল৷ সেই সঙ্গে শাস্তির এমন পদ্ধতি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’’ ইতিমধ্যেই ওই জায়গাতে ঘটে গিয়েছে অনেক পথদুর্ঘটনা। অকালে ঝরেছে একাধিক প্রাণ। তাই উদাসীন জনতার হুঁশ ফেরাতে জরিমানার পরিবর্তে পুলিশের অভিনব শাস্তির প্রশংসা করছেন সকলে। পথচারীরা বলছেন, ‘‘একেই বলে জাঁদরেল পুলিশ কর্তা৷ এমন শাস্তি বের করেছেন, হজম করা শক্ত, কিন্তু গালাগালি করারও অপশন নেই!’’
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে বিক্ষোভের মুখে কুণাল ঘোষ, শুভেন্দুর মঞ্চ উপড়ে ফেলার হুঁশিয়ারি
https://play.google.com/store/apps/details?id=app.aartsspl.khaskhobor