বিশেষ এই মেলায় জুয়া খেলে মেয়েরা, পাহারা দেয় পুরুষ, পুলিশ যেন ‘দর্শক’

0
37

মালদহ: মেলা মানেই মানুষের কাছে মুখরোচক খাবারের রকমারি সম্ভার, নানান ধরনের বিভিন্ন বয়সী শিশু-কিশোরদের খেলনার মনোরঞ্জন। কিন্তু পুরাতন মালদহের এটা এমন এক মেলা, যেখানে শুধুমাত্র একদিনের জন্যই জুয়া (Gamble) খেলতে হাজির হন বাড়ির গৃহবধূ থেকে সাধারণ মহিলারা। কারণ, প্রচলিত আছে যে মহিলারা এই মেলায় এসে জুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করলে সারা বছরে সংসারের সুখ, শান্তি অটুট থাকে। ফলে মূলা ষষ্ঠী উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও পুরাতন মালদহের পুরসভার মোকাতিপুর এলাকায় বসেছে জুয়ারি মেলা।

স্বভাবতই, সংসারের সুখ-শান্তি ধরে রাখতে প্রতিবারের মতো এবারও জেলার তো বটেই পাশাপাশি জেলা থেকেও রমণীকূল ভিড় করেছে মেলায়৷ সকাল থেকে মোকাতিপুর এলাকার খোলা আমবাগানে শুরু হওয়া মেলা চলে রাতভর৷ বস্তুত, প্রচলিত রীতি মেনে শুধুমাত্র এই বিশেষ একটি দিনের জন্য মেলার জুয়াখেলায় নেই কোনও পুলিশি নিষেধাজ্ঞা৷ বড়লোক-গরিবের ভেদাভেদও নেই৷ পুরাতন মালদার বাসিন্দারা এই মেলার সাক্ষী কয়েক প্রজন্ম ধরে৷

- Advertisement -

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,  এই মেলা মূলত মুলা ষষ্ঠীর দিনে অনুষ্ঠিত হয় এবং নিজেদের সন্তান কামনার জন্য মা লক্ষ্মীকে পূজা দেন৷ মেলার পাশেই সতী বেহুলা নদীর জল খেয়ে শুদ্ধি হন মহিলারা এবং মায়েরা এখানে আজও ঐতিহ্য পরম্পরা মেনে পুজো দিতে আসেন। এদিন সকালে শুরু হয় ষষ্ঠীপুজো৷ পুজো শেষ হতে না হতেই বসে জুয়াখেলার আসর৷ শুধু মালদা কিংবা রাজ্যের অন্যান্য জেলা থেকে নয়, বিহার, ঝাড়খণ্ড, এমনকি অসম থেকেও অনেকে এই জুয়ার মেলায় আসেন জুয়া খেলতে।

এদিন পুরাতন মালদার মোকতীপুর এলাকায় এসেছিলেন গৃহবধূ সনেকা বর্মন, তৃপ্তি প্রামাণিকেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘এই এলাকায় এসে মুলাষষ্ঠী পূজা দিয়ে সামান্য পয়সার জুয়া (Gamble)  খেলেছি। লাভ হয়েছে। এতে শামিল হলে সারা বছর পরিবারের সুখ-শান্তি সমৃদ্ধ থাকে। লক্ষ্মী লাভ হয়। এমনই দৃঢ় বিশ্বাস গোটা এলাকার বাসিন্দাদের। তার কারণেই যুগ যুগ ধরে এই মেলা চলে আসছে।’’ এই মেলার সৃষ্টিকর্তাকে তা নিয়েও পরিষ্কারভাবে জানাতে পারেননি এলাকার বাসিন্দারা। তবে মা লক্ষ্মীর কৃপায় গ্রামের সুখ শান্তি বিরাজ করছে। তাই মোকাতিপুর এলাকায় জুয়ারি মেলা আজও প্রসিদ্ধ রয়েছে।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভুয়ো শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের

https://play.google.com/store/apps/details?id=app.aartsspl.khaskhobor