বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: দশমহাবিদ্যার দ্বিতীয়া দেবী কালিকা বা কালী হিন্দুদের পরম আরাধ্যা দেবী। হিন্দু ধর্মের দেব-দেবীদের মধ্যে অন্যতম প্রধান তিনি। কিন্তু মা তো মা-ই হন। তাঁর কাছে কী বা হিন্দু কী বা মুসলিম। পাকিস্তানের কালাট শহরে রয়েছে প্রায় ২,০০০ বছরের প্রাচীন এক এমন কালীমন্দির, সেখানে মায়ের টানে হাজির হন তাঁর অগণিত ইসলাম ধর্মালম্বী সন্তান। আর মা-ও কাউকেই ফেরান না খালি হাতে। বেলুচিস্তান প্রদেশের কালাট শহরে অবস্থিত এই জাগ্রত কালীমন্দিরের নাম কালাটেশ্বরী বা কালাট কালী মন্দির।
আরও পড়ুন: বলরামের ভার বহন করা জগন্নাথের থেকেও কঠিন, কেন জানেন
বিগ্রহের রং দক্ষিণাকালীর মতই ঘোরতর নীল। তবে আমাদের পরিচিত প্রতিমার মত কালাট কালী চতুর্ভুজা নন। তাঁর দেবী দুর্গার মতই দশ হাত। তাতে রয়েছে ঢাল, তলোয়ার, গদা, চক্র, শঙ্খ, ধনুক, ত্রিশূল, নরমুণ্ড এবং খঞ্জর। অন্যদিকে মায়ের গলায় যে নরমুণ্ডের মালা তা কিন্তু নকল নয়। একেবারে সত্যিকারের নরমুণ্ডের মালা। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, দেবীর রূপটি এখানে করালবদনা। যদিও এই ভীষণা রূপ সত্ত্বেও স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, কালাটেশ্বরী দেবীই তাঁদের সমস্ত বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করেন।
ফলে হিন্দুদের পাশাপাশি অগণিত মুসলিম ভক্তও ছুটে আসেন কালাট মায়ের টানে। এমনকি এই মন্দিরের পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন বালুচ মুসলিমরাই। ৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই মন্দির। আজও এত ভক্তের ঢল নামে যে গর্ভগৃহে দেবী প্রতিমা কাঁচ দিয়ে ঘিরে রাখতে হয়েছে।
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/
মন্দিরে যাঁরা পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদের বলা হয় মহারাজ। এই মহারাজদের দ্বারা কালাটেশ্বরী দেবী প্রতিদিন নিত্য পুজো পেয়ে থাকেন। রয়েছে ষোড়শোপচারে নিত্য ভোগের ব্যবস্থাও। সেই ভোগ পুজোর পর বিতরণ করা হয় ভক্তদের মধ্যে। প্রতিবছর দীপান্বিতা অমাবস্যায় অর্থাৎ কালীপুজোর দিন বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয় এই মন্দিরে। তাছাড়া হোলি, দশহরা এবং গুরু পূর্ণিমার দিনেও বড় করে পুজো হয় দেবী কালাটেশ্বরী কালীর।