বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: একজন মানুষ কতদিন বেঁচে থাকতে পারে? খুব বেশি হলে ১০০ বা তার সামান্য কিছু বেশি বছর। কিন্তু এমন ৮ জন ব্যক্তি রয়েছেন যাঁরা আদিকাল থেকে আজও জীবিত রয়েছেন। চেনেন এঁদের? হিন্দু পুরাণে এই ৮ জনের উল্লেখ রয়েছে। যাদের চিরঞ্জীবী বলা হয়েছে।
চিরঞ্জীবী শব্দটিকে ভাগ করলে দুটি আলাদা আলাদা শব্দ মেলে। চির এবং জীবী। চির অর্থে চিরকাল। অন্যদিকে জীবী কথাটির অর্থ হল জীবিত। দুয়ে মিলে চিরঞ্জীবী শব্দের আক্ষরিক অর্থ, চিরকাল জীবিত থাকবেন যিনি। কিন্তু তাঁরা কি সত্যিই এখনও জীবিত রয়েছেন? সেই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে তাঁদের পরিচয়েই। চলুন, এক নজরে চিনে নেওয়া যাক, হিন্দু পুরাণের অষ্ট চিরঞ্জীবীকে।
(১) পরশুরাম: বিষ্ণুর ষষ্ঠতম অবতার পরশুরাম। যিনি মোট ২১ বার পৃথিবী থেকে ক্ষত্রিয়দের নিশ্চিহ্ন করেছিলেন। এছাড়া পিতার আদেশে নিজের মাতাকেও হত্যা করেন পরশুরাম। তখন পিতা জমদগ্নি খুশি হয়ে তাঁকে অমরত্বের বর প্রদান করেন। কথিত, কলিযুগে বিষ্ণুর দশম অবতার কল্কি যখন অবতীর্ণ হবেন তখন তাঁর গুরু হবেন পরশুরাম।
(২) হনুমান: পবনপুত্র হনুমানকে কে না চেনে? ব্রহ্মচর্যের প্রতীক তিনি। সীতাদেবীর বরে তিনি চার যুগ অমর। এখনও নাকি শ্রীলঙ্কার একটি বিশেষ জনগোষ্ঠী তাঁর দেখা পেয়ে থাকেন। অন্ততঃ তেমনটাই কথিত। একইভাবে কথিত, পৃথিবীতে যতদিন রামনাম থাকবে, ততদিনই থাকবেন হনুমান।
আরও পড়ুন: মনসা : পুরাণের পাতা থেকে লোককথার দেবী
(৩) অশ্বত্থামা: দ্রোণপুত্র অশ্বত্থামার কাছে অমরত্ব বর নয়। বরং এক নির্মম অভিশাপ। পঞ্চপান্ডবের ৫ সন্তানকে ঘুমের মধ্যে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন। সেই কারণে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে অভিশাপ দেন, চরম দুর্ভোগে তাঁর দিন কাটবে। আর কখনওই তা থেকে মুক্তিস্বরূপ মৃত্যু হবে না তাঁর। অশ্বত্থামাকে মনে করা হয় শিবের অবতার।
(৪) দৈত্যেরাজ বলি: বামন অবতার রূপে বিষ্ণু ত্রিপাদ জমি চেয়েছিলেন বলি রাজার কাছে। এভাবেই তিনি বলির দর্পচূর্ণ করে তাঁকে পাতালে পাঠান। তবে বলি ধার্মিক ছিলেন বলে বিষ্ণু তাঁকে অমরত্বের বর দেন। মহাপ্রলয়ের পরও তিনি বেঁচে থাকবেন।
(৫) বেদব্যাস: মহাভারতের রচয়িতা বেদব্যাস। এমনকি তাঁর ঔরসে-ই ধৃতরাষ্ট্র এবং পাণ্ডুর জন্ম হয়। গণেশকে দিয়ে তিনি মহাভারত লিখিয়েছিলেন। তখন গণেশ খুশি হয়ে তাঁকে দীর্ঘায়ু প্রদান করেন। আবার বিষ্ণু তাঁকে অমরত্বের বর দিয়েছিলেন।
(৬) কৃপাচার্য: সম্পর্কে দ্রোণাচার্যের শ্যালক। তিনি কৌরবদের গুরু এবং কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরবদের পক্ষ নেন। যদু বংশ ধ্বংসের আগে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে অমরত্বের বর দিয়েছিলেন।
(৭) বিভীষণ: রাবণের ভাই হয়েও অধর্মের পথ নেননি। প্রথমে দাদাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাতে কাজ না বলে রাম-রাবণের যুদ্ধে রামের পক্ষ নেন। ব্রহ্মা তাঁকে অমরত্ব প্রদান করেছিলেন।
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/
(৮) মার্কণ্ডেয়: বালক ঋষি মার্কণ্ডেয় শিবের পরম ভক্ত। মহাদেবের কৃপায় যমও তাঁকে ছুঁতে পারেনি। আর কখনও পারবেও না। সেই কারণেই তিনি অমর।