শ্রীনগর: তালিবানরা আফগানিস্তান দখল নেওয়ার পর থেকেই চাপ বেড়েছে ভারতের। কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ নতুন করে মাথাচাড়া দিতে পারে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এমনকি বলা হয়েছিল আফগানিস্তানে আমেরিকার ফেলে যাওয়া অস্ত্র হাতে আসতে কাশ্মীরে জঙ্গিদের হাতে। সেই আশঙ্কাই এবার সত্যি হয়েছে। কারণ কাশ্মীর উপত্যকায় নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র একটি নতুন এবং বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সাম্প্রতিক একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গিয়েছে আমেরিকার তৈরি রাইফেল এবং পিস্তল সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করছে।
নতুন বছরের শুরু থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযান অভ্যহত হয়েছে। মিলছে সাফল্যও, সেনারা খতম করেছে একাধিক জঙ্গিকে। ভারতীয় সেনা যে জঙ্গিদের খতম করেছে তারমধ্যে রয়েছে ছয় জন বিদেশী জঙ্গি। সেনা জানিয়েছে খতম হওয়া সেই জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে মার্কিন তৈরি M4 কার্বাইন রাইফেল। পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট (PAFF) নামে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে M249 স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, 509 ট্যাক্টিক্যাস বন্দুক, M1911 পিস্তল এবং M4 কার্বাইন রাইফেল ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। জানিয়ে রাখা ভালো এই সব অস্ত্র আমেরিকান সেনাবাহিনী ব্যবহার করছে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আমেরকার ফেলে যাওয়া এই সমস্ত অবশিষ্ট অস্ত্র ও গোলাবারুদ আফগানিস্তানে তালেবানরা প্রকাশ্যে বিক্রি করছে। সেই অস্ত্র হাতে আসছে ভারতের থাকা জঙ্গিদের কাছে। ভারতে এই অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করছে পাকিস্তানের সন্ত্রাস গোষ্ঠীগুলি। জানা যাচ্ছে যে পাক সন্ত্রাসবাদীরাই তালিবানদের কাছ থেকে এই অস্ত্র ও গোলাবারুদ কিনে সীমান্ত পেরিয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় পাঠাচ্ছে। বলে রাখা ভালো এই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এমনকি আগেই জানানো হয়েছিল তালিবান নামক জেহাদি গোষ্ঠীরা আফগান দখল নেওয়ার পর সব থেকে বেশি লাভ হয়েছে পাকিস্তানেরই। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক সর্বদা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাকিস্তান থেকে পরিচালিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে পড়বে। সেই কথাই সত্যি হচ্ছে এবার।
আরও পড়ুন- UP Election: শুরু মুসলিম মন জেতার ত্রিকোণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা
ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে কাশ্মীরে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে M4 কার্বাইন রাইফেলের মতো কিছু গোলাবারুদ সাম্প্রতিক অভিযানে বাহিনী উদ্ধার করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর মতে, কাশ্মীর উপত্যকায় প্রায় ৮৫ বিদেশী সন্ত্রাসী রয়েছে। এই বিদেশী সন্ত্রাসীরা আমেরিকান অ্যাসল্ট রাইফেল বহন করছে।ড্রোনের সাহায্যে সীমান্তের ওপার থেকে এই রাইফেল, পিস্তল, গ্রেনেড ইত্যাদি পাঠানো হচ্ছে বলেও মনে করেন নিরাপত্তা বাহিনী। এমনকি সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনী একাধিক অস্ত্র সরবরাহের পরিকল্পনা ব্যর্থ করেছে। অত্যাধুনিক অস্ত্রই এখন কাশ্মীরে সুরক্ষা বাহিনীর কাছে নতুন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিদের ব্যবহৃত আমেরিকান অস্ত্র নিয়েই এখন ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে।