রাঁচি: ‘জাতীয়তাবাদ’ শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রধান মোহন ভগবত। নিজের এই বক্তব্যের সমর্থনে দিয়েছেন জোরাল যুক্তি। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা।
কেন্দ্রের শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি সংঘের মতাদর্শ মেনে চলে। কেন্দ্র সরকারের গৃহীত নানাবিধ সিদ্ধান্ত নাগপুরে অবস্থিত সংঘের প্রধান কার্যালয় থেকেই নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে বিরোধী শিবির। একই সঙ্গে বিজেপির রাজনীতির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে এই জাতীয়তাবাদ। নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থেকে মানুষের নজর ঘোরাতেই ‘জাতীয়তাবাদ’ শব্দের ব্যবহার করে বিজেপি। এই অভিযোগও রয়েছে কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে।
এই অবস্থায় সংঘের সর্বময় কর্তার সেই জাতীয়তাবাদ শব্দের ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। বৃহস্পতিবার রাঁচিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোহন ভগবত বলেন, “জাতীয়তাবাদ শব্দটি ব্যবহার করবেন না। ‘দেশ’ বলবেন চলবে। ‘জাতীয়’ করবেন চলবে। কিন্তু জাতীয়তাবাদ শব্দটি বলবেন না।” কিন্তু কেন এই নির্দেশ দিলেন অনুগামীদের? নিজেই এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মোহন ভগবত। তিনি বলেছেন, “জাতীয়তাবাদ শব্দটির অর্থ হচ্ছে হিটলার নাৎসিবাদ।”
খুব স্বাভাবিকভাবেই সংঘ প্রধানের মুখে এই ধরণের কথায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভ চলছে সমগ্র দেশ জুড়ে। বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কেন্দ্র সরকারকে ফ্যাসিস্ট বলে আক্রমণ করেছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে ‘জাতীয়তাবাদ’ শব্দের ব্যবহার করে রাজনীতির পুরনো অভিযোগ তো রয়েছেই। সেই শব্দের সঙ্গে নাৎসিবাদের যোগ থাকার কারণেই কি জাতীয়াতাবাদ ছেঁটে ফেলতে চাইছেন সংঘ প্রধান?
দেশের অভ্যন্তরে নানাবিধ হিংসা এবং অশান্তির জন্য মৌলবাদকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন সংঘ প্রধান। এই পন্থা নতুন কিছু নয়, ভারতে এর আগেও এমন অনেকবার ঘটেছে বলে দাবি করেছেন মোহন ভগবত। তাঁর কথায়, “মৌলবাদী চিন্তাধারার জন্য দেশে অশান্তি চলছে। ভারতের এটা বহু পুরনো পন্থা। আমরা কাউকে দাস বানিয়ে রাখি না। আমরা কারও দাস হিসেবেও থাকি না। আমরা চিরদিনই সকলকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। ভারতের সংস্কৃতি হিন্দুদের সংস্কৃতি।”