বেঙ্গালুরু: এক বৃন্তে দুইটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান। কবি কাজি নজরুল ইসলামের লেখা সেই কবিতা এখন প্রশ্নের মুখে। যা নিয়ে বিতর্কও কিছু কম হচ্ছে না। এই অবস্থায় কিছুটা ভিন্ন ছবি দেখা গেল দ্রাবিড়ভূমিতে। সাড়ে তিনশ বছরের পুরনো মন্দিরের জ্যোতিষীর পদের দায়িত্ব পেলেন এক মুসলিম ব্যক্তি।
ঘটনাটি দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটকের। ওই রাজ্যের গদাগ জেলায় অবস্থিত মুরুগা রাজেন্দ্র মাতার মন্দির। সেই মন্দিরের বয়স পেরিয়েছে ৩৫০ বছর। সেই মন্দিরে পুরোহিতের পাশাপাশি জ্যোতিষী পদের জন্যেও একজনকে নিয়োগ করা হয়ে থাকে। দেশের বহু শতাব্দী প্রাচীন মন্দিরে এই রেওয়াজ চালু রয়েছে। রাজন্দ্র মুরুগা রাজেন্দ্র মাতার মন্দিরও সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়।
সেই মন্দিরেই এবার দেখা গিয়েছে একটা ভিন্ন ছবি। যা বিরাট এক বার্তা দেয় বর্তমান সমাজকে। ওই মন্দিরের জ্যোতিষীর পদে নিযুক্ত হয়েছেন এক মুসলিম ব্যক্তি। আলোচিত সেই ব্যক্তির নাম দেওয়ান শারিফ মোল্লা। ৩৩ বছরের ওই ব্যক্তিকে মন্দিরের জ্যোতিষীর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মন্দিরের পুরহিত মুরুগারাজেন্দ্র করোনেস্বরা স্বামী। যদিও পুরোহিতের নির্দেশের থেকেও এই সমগ্র বিষয়টির জন্য ঈশ্বরকেই ধন্যবাদ জানাচ্ছেন শারিফ। তাঁর কথায়, “কেউ আমায় এই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য জোর করেনি। স্বয়ং ঈশ্বর আমার মনের মধ্যে এসে নির্দেশ দিয়েছেন এবং আমায় পরিচালনা করেছেন।”
মন্দিরের জ্যোতিষীর পদে মুসলিম ব্যক্তির আসীন হওয়ার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই বলে দাবি করেছেন পুরোহিত করোনেস্বরা স্বামী। তিনি বলেছেন, “ঈশ্বরের বা মানুষের সেবার জন্য জাত বা ধর্মের কোনও গুরুত্ব নেই।” সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন যে ঈশ্বর যদি কোনও ব্যক্তির কাছে ভালোবাসা এবং ত্যাগের বার্তা নিয়ে আসেন তাহলে জন্মসূত্র বা জাতের কোনও গুরুত্ব থাকে না।
এই একই সুর সোনা গিয়েছে জ্যোতিষী দেওয়ান শারিফ মোল্লা-র মুখে। তিনি বলেছেন, “আমি সর্বদা ধর্মের পথে হেঁটেছি এবং এখনও সেই নীতি থেকে সরছি না। ধর্ম আমাকে ভালোবাসা এবন ত্যাগ শিখিয়েছে। আমি সেতারই প্রসার ঘটাচ্ছি।”