আগরতলা: কোটা আন্দোলন নিয়ে কয়েকদিন আগে পর্যন্ত উত্তাল ছিল বাংলাদেশ। তবে সেখানে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই বিষয় নিয়ে চর্চায় ছিল বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশের জেল থেকে তিন দশক পর মুক্তি পেয়ে ভারতে ফিরলেন ত্রিপুরার সিপাহীজলা জেলার এক ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে ত্রিপুরার সিপাহীজলা জেলার শাহজাহান বাংলাদেশের কারাগারে ৩৭ বছর কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন। শাহজাহান বিএসএফ সদস্যদের সহায়তায় শ্রীমন্তপুর স্থল শুল্ক স্টেশন হয়ে ভারতে ফিরে আসেন।সোনামুড়া মহকুমার সীমান্তবর্তী গ্রাম রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা শাহজাহান ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের কুমিল্লায় তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সফরকালে পুলিশ তার আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে প্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করে বলেই সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন। শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, ” ২৫ বছর বয়সে, কুমিল্লার একটি আদালত আমাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। আমার সাজা শেষ হওয়া সত্ত্বেও, আমি মুক্তি পাইনি এবং ২৬ বছর অতিরিক্ত হেফাজতে কাটিয়েছি, আমাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়ার আগে মোট ৩৭ বছর জেলে ছিলাম।” তাঁর অভিযোগ, “কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১১ বছর কারাভোগের পর, মিথ্যা অভিযোগে আমাকে অন্য কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছিল এবং সেখানে অতিরিক্ত ২৬ বছর কাটিয়েছি।”
জানিয়ে রাখা ভালো, শাহজাহানের প্রতি অবিচারের বিষয়টি কয়েক মাস আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তার দুর্দশা জারা ফাউন্ডেশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। জারা ফাউন্ডেশনের একটি সংস্থা যা বিদেশে আটকে পড়া অভিবাসীদের সাহায্য করার জন্য কাজ করে। এমনটাই শাহজাহানের পরিবার জানিয়েছে। জারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোশাহিদ আলী শাহজাহানের মুক্তি নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেন। অনেক আইনি প্রক্রিয়ার পর, অবশেষে মঙ্গলবার শাহজাহানকে শ্রীমন্তপুর এলসিএস-এ বিএসএফ কর্মীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন শাহজাহান ৬২ বছর বয়সী। শাহজাহান যখন ২৬ বছরের জেলে গিয়েছিলেন তখন তাঁর স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন। ফিরে আসার পর তাঁর ছেলে তাকে প্রথমবার শারীরিকভাবে দেখেছিল। তিনি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বলেছেন, “আমি আমার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমার মনে হচ্ছে আমি স্বর্গে আছি। এটা আমার জন্য পুনর্জন্মের মতো। আমি কখনো ভাবিনি যে আমি এই জীবনে আমার জন্মস্থানে ফিরব। এটা জারা ফাউন্ডেশন যা আমাকে ঘরে ফিরিয়ে এনেছে। আমি সারাজীবন সংগঠনের কাছে ঋণী থাকব।”