
নয়াদিল্লি: ২০২০ সালে গালওয়ানে লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন সেনার মুখোমুখী সংঘর্ষের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক উত্তপ্ত। ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হওয়ার কারনেই জটিলতা আরও বেড়েছে। একাধিক বার বৈঠকের পরেও মেলেনি সমস্ত সমাধান। কয়েকদিন ধরেই লাদাখ সীমান্তে নতুন করে চিনা আগ্রাসনের খবর প্রকাশ্যে আসছে। ড্রাগনের চোখ রাঙ্গানি নিয়ে নয়া আতঙ্কের মধ্যেই আশা নয় খারাপ খবর শোনালেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (Foreign Minister S Jaishankar)। ভারত-চিনের সম্পর্ক খুব একটা ভালো জায়গায় নেই।
ভারতীয় সেনা স্বীকার না করলেও মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের (US Defense Ministry) বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে ভারতের দিকে ফের আগ্রাসী হচ্ছে চিন শুধু তাই নয় বেজিংয়ের বিরুদ্ধে অরুনাচলের শি ইয়োমি জেলায় ঢুকে গ্রাম বানানোর অভিযোগ উঠেছে। এক সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল দাবি করেছে অরুণাচল প্রদেশের ৪ কিলোমিটার ভিতরে আস্ত গ্রাম বানিয়ে বানিয়েছে চিন। এমনটাই উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ছে বলে দাবি কড়া হয়েছে। সেই সবের মধ্যেই এস জয়শঙ্কর বলেছেন, “আমি মনে করি দুই দেশের সম্পর্ক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই নিয়ে চিনের সংশয়ের কোনও অবকাশ নেই। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোন কোন বিষয়গুলি থেকে সমস্যা তৈরি হচ্ছে সেই নিয়ে সংশয় থাকার কারণ নেই।”
এখানেই শেষ নয় ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, “দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। চিন এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তির বিরুদ্ধে। সেই সিদ্ধান্ত গুলির কোনও বিশ্বাসযোগ্য ব্যখ্যাও তাদের কাছে নেই। আমি বলব, দুদেশের সম্পর্ক নিয়ে চিনের আরও বেশি চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াই ই-র সঙ্গে আমার অনেকবারই আলোচনা হয়েছে। আপনারা সকলেই জানেন আমি সোজাসুজি, পরিষ্কার ও যুক্তিসঙ্গতভাবে কথা বলে থাকি। বৈঠকে আমি ঠিক সেইভাবেই কথা বলেছি। আমি নিশ্চিত তাদের যদি আমার কথা শোনার হত তবে তারা তা অবশ্যই শুনতে পারত।”
বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্যের পর থেকেই ওয়াকিবহল মহল জানাচ্ছেন চিনকে নয়ে নতুন করে মাথাব্যাথা বাড়ছে কেন্দ্রের। এই খবরের পর উদ্বেগ বাড়ছে দেশবাসীরও। ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ানে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকেই ভারত-চিনের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছিল। ভারত সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসলেও এগিয়ে আসেনি চিন। উল্টে সীমান্তের বেশকিছু জায়গাতে দুই দেশই ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। শুধু তাই নয় সীমান্তে সেনাদের থাকার জন্য নতুন করে পরিকাঠামো তৈরি করছে চিনা সেনা এই খবরও মিলেছিল। সব মিলিয়ে ফের আবারও সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে চলছে বলেই মত দিচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা।