খাস ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে চলমান বিতর্ক রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে অপরাধ জগতের মানুষজনও ব্যবহার করছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে চলেছে দেহব্যবসা থেকে আরম্ভ করে অবাধে শিশুবিক্রি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সারা ভারতে নবজাতক বিক্রির ব্যবসা চলছে। সন্তানহীন দম্পতিরা কিনছেন। জাল বিছিয়ে বসেছে যে চক্রগুলো ওরা ৪ থেকে ৬ লক্ষ টাকায় একেকটি শিশুকে বিক্রি করছে।
ভারতে সন্তানহীন দম্পতিরা শিশু কিনলে তা পুরোপুরিভাবে বেআইনি কাজ। শিশুপাচার ঠেকাতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে একের পর এক আইন আনা হয়েছে। শিশুর প্রতি যৌন নির্যাতন ঠেকাতে ২০১২ সালে ‘দ্য প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্স’ প্রণয়ন করা হয়েছে। দাসশ্রমিক হিসেবে শিশুদের কাজ করানো ঠেকাতে ১৯৭৬ সালে দাসব্যবস্থা বিলোপেও আইন আনা হয়।
এছাড়াও আরও কয়েকটি আইন আছে শিশুদের স্বার্থে। সেই আইনগুলো কতদূর পর্যন্ত কার্যকর হচ্ছে এও জরুরি প্রশ্ন। কেবল ভারত নয়, সারা পৃথিবীজুড়েই চলছে শিশুপাচারের মতো অপকর্ম। ইউনিসেফের তথ্য অনুসারে, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ১ কোটি ২০ লক্ষ শিশুকে পাচার হচ্ছে। পাচার হওয়া এই শিশুদের সন্তানহীন দম্পতির কাছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বেচে দেওয়া থেকে শুরু করে জোর করে শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো কিংবা শিশুদের পরিচারক-পরিচারিকা হিসেবে কাজ করানো, যৌনকর্মী হিসেবে কিশোরীদের বেআইনিভাবে কাজে লাগানো চলছে বিশ্বজুড়েই।
সূত্রের খবর, ভারতের যে রাজ্যগুলোতে অবাধে শিশুপাচারের ঘটনা ঘটছে তার মধ্যে অন্যতম রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। বাকি রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য। গবেষকরা জানিয়েছেন, ভারতের মাটি থেকে বিপজ্জনকভাবে শিশুদের পাচার করা হচ্ছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ দারিদ্র্য।
শিশুপাচারের মাধ্যমে মাফিয়ারা শত শত কোটি টাকা উপার্জন করছে। শিশুপাচার পৃথিবীতে তৃতীয় লাভজনক অপরাধ বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘ ১৯৮৯ সাল থেকে লাগাতারভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে চলেছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শিশুপাচার রুখতে আইন প্রণয়ন করা ছাড়া আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন। ভারতে সেই কাজ যথাযথভাবে হয়নি। এর ফল ভুগতে হচ্ছে দরিদ্র পরিবারগুলোয় জন্মগ্রহণ করা বহু শিশুকে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, প্রতিবছর ভারতে ৪০ হাজার শিশুকে অপহরণ করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিবছর কয়েক হাজার শিশুকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাচার করা হচ্ছে। শিশু চোরাচালান রুখতে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার কথাও বলছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। সারা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিশুপাচারের ঘটনা ঘটছে ফিলিপাইনে। প্রতিবছর ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ শিশুকে পাচার করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফিলিপাইন থেকে শিশুদের নানান দেশে পাচার করা হচ্ছে যৌনকর্মী হিসেবে।