খাস ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটছে। এর জেরে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের বিপর্যয়। এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে কর্তব্য পালন করছে না গোটা মানবজাতিই। ফলে আধুনিক সভ্যতা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলেছে।
সারা পৃথিবীজুড়ে মাংস খাওয়ার প্রবণতা উত্তরোত্তর বাড়ার ফলে প্রচুর পরিমাণ গবাদি পশুপালন করা হচ্ছে। গবাদি পশুপালন বৃদ্ধির ফলে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণও হু-হু করে বাড়ছে। যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে এর মধ্যে ১৫ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে গবাদি পশুপালনের ফলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে হলে ব্যাপক হারে গবাদি পশুপালন করা যাবে না। আর সারা বিশ্বের মানুষকে মাংস খাওয়ার অভ্যাস কমাতে হবে। তবে সেই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলির নাগরিকরা প্রচুর পরিমাণ মাংস খান। গত ৬০ বছরে মাংস খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা প্রচুর পরিমাণ মাংস খেলেও ভারতের অধিকাংশ নাগরিকের মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। মাংস খাওয়ার নিরিখে ভারত বিশ্বের উন্নত দেশগুলির সঙ্গে তুলনাতেই আসে না।
গবেষকরা জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর নাগরিকরা প্রচুর পরিমাণে মাংস খাওয়ার দরুণ ওঁদের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে গোটা বিশ্বের সমস্ত নাগরিকের পাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাংসের জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। ভারতে একেকজন নাগরিক বছরে ৩.২ কেজি মাংস খান। সমীক্ষাগুলিতে দেখা যাচ্ছে, ভারতে মাংস খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। একসময়ে ভারত-সহ বিশ্বের যে দেশগুলোতে শাকসবজি খাওয়ার প্রবণতা বেশি ছিল বর্তমানে সেই দেশগুলোতেও মাংস খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ভারত ছাড়াও প্রতিবেশী পাকিস্তান এবং আফ্র্রিকায় শাকসবজি জাতীয় খাদ্যগ্রহণের বদলে মাংস খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই দেশগুলির জনসংখ্যা গত ৫০ বছরে অনেকটা বেড়েছে। এছাড়া আয়ও বেড়েছে এই দেশগুলির বাসিন্দাদের। এর ফলে মাংস খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে প্রকৃতিতে সামঞ্জস্য আনা সম্ভব বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এজন্য প্রচুর পরিমাণ মাংস খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করে এর পরিবর্তে পুষ্টিকর শাকসবজি খাওয়া উচিত। তবে বিজ্ঞানীদের এই পরামর্শ মানবজাতি কানেই তুলছে না। ফলে বিপদ বাড়ছে।
মাংসের বিকল্প খাবার নিয়ে পৃথিবীতে সচেতনতামূলক প্রচার তেমন জোরালো নয়। সূত্রের খবর, বিশ্বের নানা দেশে মাংসের বিকল্প এমন খাবার বেরিয়েছে যা দেখতে অনেকটা মাংসের মতো। এই বিকল্পগুলোর স্বাদও মাংসের মতোই।
নতুন একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা বেশি পরিমাণ মাংস খান। বিশেষত, বিশ্বের ধনী দেশগুলোতে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলো। এসম্পর্কে বিশ্বের ২৩ টি দেশে সমীক্ষা চালানো হয়েছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।