পানাজি: গোয়া মানেই অন্য রকম অনুভুতি আসে মানুষের মনে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশআপাশি সমুদ্ররে পাড়ে বসে অন্য জগতে ভেসে যাওয়া যায়। পার্টি এবং নাইট লাইফ যারা পছন্দ করেন তাঁদের জন্য আদর্শ জায়গা। রঙিন পানীয় উপভোগ করার সেরা ঠিকানা। পর্যটনকে গোয়ার অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং অন্যান্য জিনিসগুলির মধ্যে রাজ্যটি রাজজাগা পার্টির জন্য বিশেষ পরিচিত। কিন্তু এবার গোয়ার বিজেপি বিধায়ক প্রেমেন্দ্র শেটের উপকূলীয় রাজ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বিধানসভায়। এই খবর সামনে আসতেই স্বাভাবিক ভাবেই চর্চা শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার হাউসে ক্তৃতা দেওয়ার সময় প্রেমেন্দ্র শেট বলেছেন, ” ‘বিকশিত ভারত’ এবং ‘ বিকশিত গোয়া’-এর জন্য, গোয়ায় অ্যালকোহল পান নিষিদ্ধ করা উচিত। আমরা রাজ্যে অ্যালকোহল তৈরি করতে পারি এবং অন্যান্য রাজ্যে রপ্তানি করতে পারি, তবে এর ব্যবহার গোয়ায় নিষিদ্ধ করা উচিত।” তাঁর বক্তব্যকে জোরদার করার জন্য, উত্তর গোয়ার মায়েম বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিনিধিত্বকারী প্রথমবারের বিজেপির সাংসদ বলেছেন, রাজ্যে ক্রমবর্ধমান অ্যালকোহল সেবনের কারণে রাস্তাঘাটে এবং শিল্প ইউনিটগুলিতেও মানুষ মারা যাচ্ছে। তবে বিজেপি বিধায়কের মন্তব্যে দলের অন্দরেই নানা কথা উঠতে শুরু করেছে। অন্য এক বিজেপি বিধায়ক ডেলিলা লোবো এই মন্তব্যে অবাক হয়ে বলেছেন, প্রেমেন্দ্র শেট চান গোয়ার লোকেরা তাদের রেস্তোঁরা ব্যবসা বন্ধ করে দিক। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “মদ এখানে পর্যটকদের আসার একটা কারণ। আমরা কি করব… আমরা কি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেব? এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা ভালো, ডেলিলা লোবো এবং তাঁর স্বামী গোয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে হোটেলের চেনের মালিক।
অন্যদিকে আপ বিধায়ক ক্রুজ সিলভা বলেছেন, গোয়ায় অ্যালকোহল নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “এখানে রাস্তায় দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায় কিন্তু গোয়ানরা এতে জড়িত নয়। এখানে অনেক রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য ব্যবসা রয়েছে যেগুলি অ্যালকোহল বিক্রির উপর নির্ভরশীল। অ্যালকোহল নিষেধাজ্ঞা কর্মসংস্থানকে প্রভাবিত করবে।” ক্ষমতাসীন বিজেপির আরেক বিধায়ক কেদার নায়েক বলেছেন, “গোয়া একটি পর্যটন রাজ্য এবং মদ পর্যটন শিল্পের একটি অংশ। অনেক স্থানীয়দের ব্যবসা রাজ্যের মদ বিক্রয় শিল্পের উপর নির্ভরশীল।” স্বতন্ত্র বিধায়ক ডাঃ চন্দ্রকান্ত শেঠে বলেছেন যে গোয়া মদ নিষিদ্ধ করতে পারে না তবে রাজ্যে এর ব্যবহার কমাতে কাজ করতে হবে। তবে এই সব কথা কানে না দিয়ে প্রেমেন্দ্র শেট বলেন, “জীবন বাঁচাতে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ করা দরকার ছিল। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে বর্তমানে মদের ব্যবসায় নিযুক্ত লোকেরা কী করবে জানতে চাইলে শেট বলেছিলেন, “তাদের অন্য ব্যবসায় স্থানান্তরিত করতে দিন।” মদ নিষিদ্ধ হলে পর্যটনে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও দাবি করেন তিনি।