ইটানগর: মাস ছয়েক আগেই জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে সংবিধানের ৩৭০ ধারা। যার কারণে বিশেষ মর্যাদা হারিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। তারপর থেকেই ৩৭১ ধারা নিয়ে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। কাশ্মীরের পর কী উত্তর-পুর্বের রাজ্যগুলির ক্ষেত্রেও আসতে চলেছে কোনও অশনি সংকেত? যা নিয়ে শুরু হয় চর্চা।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ৩৪তম রাষ্ট্র দিবসে অরুণাচল প্রদেশে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানেই সংবিধানের ৩৭১ ধারা নিয়ে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির কাছে বড় বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন যে মোদী সরকারের আমলেই উত্তর-পূর্ব ভারতের সকল রাজ্যগুলির সঙ্গে সমগ্র দেশের আত্মিক যোগ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখন থেকে ৩৭১ ধারা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির উপর থেকে ৩৭১ ধারাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “অরুণাচল প্রদেশ এবং মিজোরামের এই রাষ্ট্র দিবসের অনুষ্ঠানে আমি সকলকে আশ্বস্ত করছি যে সংবিধানের ৩৭১ হারা কেউ প্রত্যাহার করছে না। এমন কোনও উদ্দেশ্য কারও নেই।”
গত বছরের অগস্ট মাসের পাঁচ তারিখে জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে সংবিধানের বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে সমগ্র রাজ্যটিকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে দেওয়া হয়। সেই সময় থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে সংবিধানের ৩৭১ ধারা নিয়ে। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ভারতীয় সংবিধানের অংশ হয়ে রয়েছে ৩৭০ ধারা এবং ৩৭১ ধারা। তবে ৩৭১ এ থেকে এইচ এবং ৩৭১ জে ধারা পরবর্তীতে ৩৬৮ নং অনুচ্ছেদের আওতায় সংশোধনী বলে গৃহীত হয়েছে। ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সংসদ প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করতে পারে। ৩৭১ ধারা বলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্য সহ ১১টি রাজ্যের বিশেষ কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই গত সেপ্টেম্বর মাসে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিল কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে জানিয়েছিলেন যে ৩৭১ ধারাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্র সরকার উভয়ই যথাযথ মর্যাদা দিয়ে থাকে। এদিনও উত্তর পূর্ব ভারত নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা। তিনি বলেছেন, “২০১৪ সালের আগে উত্তর-পূর্ব ভারত সমগ্র দেশের সঙ্গে কেবলমাত্র ভৌগলিক এবং প্রশাসনিকভাবে যুক্ত ছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে সমগ্র উত্তর পূর্ব ভারত আমাদের হৃদয় এবং আত্মার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।”