ওয়ানাড: ভগবানের নিজের জায়গা বলা হয় কেরল। ছবির মত সুন্দর জায়গা। সেখানের ছোট্ট জেলা ওয়ানাড। পাহাড়ি রাস্তা, সুন্দর সবুজ গাছ দিয়ে ভরা। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। সেই জায়গাই একরাতের প্রকৃতির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। এখন সেখানে চলছে মৃত্যু মিছিল। টানা বৃষ্টির জেরে সোমবার মাঝ রাতে পাহাড়ে নামে ভূমিধ্বস। যা নেমে আসে পাহাড়ি গ্রামে। তাতেই তছনছ হয়ে যায় সবকিছু। ধুয়ে মুছে সাফ এলাকা। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৮। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ওয়ানাডে ভারী বৃষ্টির জন্য লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
উদ্ধারকারীরা এখনও ধসে পড়া বাড়ি এবং ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে থাকা জীবিতদের সন্ধানের জন্য মরিয়া ভাবে অভিযান চালাচ্ছে। যদি কেউ বেঁচে থাকে সেই প্রাণের সন্ধানে চলছে তল্লাশি। নির্মম এই ঘটনায় ২০০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে কারণ উদ্ধার প্রচেষ্টা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। টানা বৃষ্টির কারণে ধ্বংসপ্রায় রাস্তা এবং সেতু। সরঞ্জামের ঘাটতি, ভারী সরঞ্জামের অভাব উপড়ে পড়া গাছগুলি পরিষ্কার করা কঠিন করে তুলেছে। উদ্ধার অভিযান চতুর্থ দিনে প্রবেশ করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী, এনডিআরএফ, কোস্টগার্ড এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি যৌথ দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অনুসন্ধান চালাবে। প্রতিটি দলে তিনজন স্থানীয় এবং একজন বন বিভাগের কর্মী থাকবেন।
জানা গিয়েছে, উদ্ধারকর্মীর চল্লিশটি দল অনুসন্ধান এলাকাকে ৬টি জোনে ভাগ করে উদ্ধার অভিযান চালাবে। প্রথম জোনটি অট্টমালা এবং অরণমালা নিয়ে গঠিত। মুন্ডক্কাই দ্বিতীয় জোন, পুঞ্জিরিমাত্তম তৃতীয় জোন, ভেল্লারমালা ভিলেজ রোড চতুর্থ জোন, জিভিএইচএসএস ভেল্লারমালা পঞ্চম জোন এবং চালিয়ার নদীর স্রোত ষষ্ঠ জোন। নদীর আশপাশের আটটি থানার পুলিশ সদস্যরা এবং সাঁতারে পারদর্শী স্থানীয়রাও অনুসন্ধানে অংশ নেবেন। একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে একটি সমান্তরাল অনুসন্ধান পরিচালিত হবে। ভূমিধসের কারণে কাঠামো ভেঙে পড়ার পরে ২৫টির মতো অ্যাম্বুলেন্স রেকর্ড সময়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্বারা নির্মিত বেইলি ব্রিজ অতিক্রম করবে মুন্ডাক্কাইতে। জীবিতদের সন্ধানে শনিবার দিল্লি থেকে একটি ড্রোন-ভিত্তিক র্যাডার আসবে। কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী এবং বন বিভাগের কর্মকর্তারা ছলিয়ার নদীর তীরে এবং যেসব স্থানে মৃতদেহ ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেসব স্থানে তল্লাশি চালাবে। তামিলনাড়ু থেকে আরও চারটি কুকুরকে আজ ওয়েনাডে আনা হবে অন্য ছয়টি কুকুরের সঙ্গে যোগ দিতে যারা ইতিমধ্যেই উদ্ধার অভিযানে যুক্ত রয়েছে। জানিয়ে রাখা ভাল, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী উদ্ধার অভিযান তদারকি করতে ওয়ানাডে পৌঁছেছেন। শুক্রবার ত্রাণ কাজের জন্য দলীয় নেতাদের সাথে দেখা করবেন। তাঁরা মেপ্পাদি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি প্রতিনিধি দলের সাথেও দেখা করবেন এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।