
নয়াদিল্লি: এ যেন হত্যাপুরি হয়ে উঠেছে দেশের রাজধানী দিল্লি। লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধাকে তাঁর প্রেমিক খুন করার পর এর এক গা শিউড়ে ওঠার মত ঘটনা ঘটেছে। মা ও ছেলে মিলে বাড়ির কর্তা তথা বাবাকে খুন করেছে। শুধু খুন নয় ওই ব্যক্তির দেহ কেটেও রাখা হয় ফ্রিজে। গ্রেফতার করা হয়েছে মা ও ছেলেকে। তার পরেই সামনে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সোমবার দিল্লি পুলিশের অপরাধ শাখা স্বামী অঞ্জন দাসকে খুনের অভিযোগে এক মহিলা ও তার ছেলেকে গ্রেফতার করেছে। গেফতারে পরপরই খুনের রহস্য উদঘাটন হয়। শ্রদ্ধা ওয়াকারের হত্যা মামলার তদন্ত অব্যাহত থাকা কালীন দিল্লি পুলিশ রাজধানীর পূর্ব অংশে একই ধরনের অপরাধের পর্দা ফাঁস করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অঞ্জন দাস বর্তমান স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে তার প্রথম স্ত্রীর কাছে টাকা পাঠানোর পর অভিযুক্ত পুনম রেগে গিয়েছিলেন। তার পরেই অঞ্জনের স্ত্রী তার দীপকের সঙ্গে খুনের পরিকল্পনা করে। ছেলে দীপকও খুনের জন্য রাজি হয়েছিল কারণ সে জানিয়েছিল তার বাবা তাঁর স্ত্রীকে হেনস্থা করত। পুলিশকে জানিয়েছে অভিযুক্তরা জুন মাসে অঞ্জন দাস কে খুন করে। ছুরি দিয়ে খুনের পর রাতে রক্ত ড্রেন দিয়ে পরিস্কার করে মা ও ছেলে। তারপরের দিন পুনম এবং তার ছেলে দীপক, মৃতদেহটিকে ১০ টুকরো করে পলিথিনের ব্যাগে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে এবং সময় বুঝে পূর্ব দিল্লির পাণ্ডব নগর এবং আশেপাশের এলাকায় দেহের অংশগুলি ছড়িয়ে দেয়। পুলিশ এখন পর্যন্ত ছয়টি টুকরো খুঁজে পেয়েছে। এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ দেখেই পুনম ও দীপককে গ্রেফতার করে।
A woman along with her son arrested by Crime Branch in Delhi's Pandav Nagar for murdering her husband. They chopped off body in several pieces,kept in refrigerator & used to dispose of pieces in nearby ground: Delhi Police Crime Branch
(CCTV visuals confirmed by police) pic.twitter.com/QD3o5RwF8X
— ANI (@ANI) November 28, 2022
আরও পড়ুন-শ্রদ্ধাকাণ্ডের ছায়া, বাবাকে খুনের পর দেহের একাধিক টুকরো, অপরাধে জড়িত মৃতের স্ত্রীও
অভিযুক্তরা পুলিশকে আরও জানিয়েছে জানিয়েছে যে কোনও দুর্গন্ধ দূর করার জন্য তারা পরে ঘর এবং ফ্রিজ পরিষ্কার করেছিল। এমনকি কেউ যাতে সন্দেহ না করে সেই জন্য তারা প্রতিবেশীদের জানিয়েছিল অঞ্জন দাস কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছে। পুলিশ জানায়, অবৈধ সম্পর্কের জেরে পুনম ও তার ছেলে দীপক অঞ্জন দাসকে খুন করে। ব্যক্তিকে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয় এবং পরে খুন করা হয়। পুলিশ আধিকারিকরা ছয়টি টুকরো উদ্ধার করেছে, তবে মাথা এখনও নিখোঁজ রয়েছে। একটি ছুরি ও আরেকটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেহ কেটে ফেলা হয়েছে বলেই জানিয়েছ দিল্লি পুলিশ সূত্র। ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তদন্তকারী দল আরও জানিয়েছে, মা-ছেলের জুটি শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো ফ্রিজে রাখার পর ঘর রঙ করে, যাতে দুর্গন্ধ না হয়। তবে পালিয়ে যাওয়ার গল্প দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ চেক করেছে যাতে দেখা যায় দীপক গভীর রাতে তার হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে হাঁটছে এবং কিছু ফেলে দিচ্ছে। দিল্লির নতুন এই ঘটনা নিয়েও ফের দেশজুড়ে চর্চা শুরু করা হয়েছে।