তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল: এক বছর ধরে দেশে করোনা মহামারি দাপট চালিয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বুঝতে হবে। কারণ, করোনাই দেশের শেষ মহামারি নয়। কিন্তু কতখানি শিখেছে প্রশাসন? ২০২১ সালের বাজেট ঘোষণার পরে সেই প্রশ্ন আবার জোরালো হচ্ছে।
সোমবার বাজেট পেশ করার সময় জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য ও সেই সংক্রান্ত খাতে এক লাফে ১৩৭ শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হবে। ২০২১-২২ সালে ৬০ হাজার কোটি টাকা পানীয় জল ও স্যানিটাইজেশন খাতে বরাদ্দ করা হবে। ২৭০০ কোটি টাকা পুষ্টি খাতে বরাদ্দ হবে। যদিও এগুলো আলাদা আলাদা মন্ত্রক দেখভাল করে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আশা, গত অর্থবর্ষের তুলনায় এ বছর কমপক্ষে ৯ শতাংশ অধিক ব্যয় করা যাবে।
যদিও স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতে যে বরাদ্দ বৃদ্ধির ঘোষণা হয়েছে, তার একটি বড় অংশ আয়ুষ মন্ত্রকের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভারতে করোনা মহামারিকালে বোঝা গিয়েছে, প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নতি না ঘটলে, যে কোনও বড় বিপদ আটকানো কঠিন। আর প্রাথমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নতি করতে হলে, একদিকে যেমন, গ্রামীণ ও শহরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর পরিকাঠামোগত উন্নতির প্রয়োজন, আরেকদিকে প্রয়োজন পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য কর্মী। করোনা পর্বে দেখা গিয়েছে, দেশজুড়ে স্বাস্থ্য কর্মীর অভাব যথেষ্ট। জেলা থেকে শহর হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী নেই। তাই সেই ঘাটতি পূরণ খুব জরুরি।
কিন্তু এই দিনের বাজেটে সে নিয়ে কোনও দিশা দেখাতে পারেনি। জিডিপির মাত্র ২ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ হয়েছে। যে কোনও উন্নত দেশে জিডিপির ৪-৫ শতাংশ অন্তত স্বাস্থ্যে বরাদ্দ থাকে। গত এক বছরের বিপর্যয়ের যে নীতি নির্ধারণে বিশেষ প্রভাব ফেলেনি, এই বাজেট সে দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
যদিও কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে এই বছরে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যা একটি দেশের স্বাস্থ্য কাঠামো জোরদার করতে বেশি প্রয়োজন।
এ দিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশের পরে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া-র অধিকর্তা আদর পুন্নাওয়ালা জানিয়েছেন, করোনা মোকাবিলা করতে কোভিড ভ্যাকসিনের পাশাপশি নিউমোনিয়ার টিকাকরণেও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই দুই টিকা করণের মাধ্যমে দেশ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয় পাবে।