
খাস খবর ডেস্ক: বর্তমানে আমরা সকলেই হেলথ কন্সাস। কিন্তু আমাদের লাইফ স্টাইলের জন্য ক্রমেই বাড়ছে মেদ। যার জন্য দুশ্চিন্তা লেগেই রয়েছে। জিমে যাচ্ছি তবু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। এর কারণ শরীরে ক্রমে বেড়ে চলেছে কোলেস্টরলের মাত্রা।
কোলেস্টরল একটি চর্বি জাতীয় পদার্থ যা শরীরের রক্তে এবং কোষে উপস্থিত থাকে। এটি কোষ, টিস্যু এবং অঙ্গ তৈরির জন্য অপরিহার্য। শুধু তাই নয়, কোলেস্টেরল হরমোন, ভিটামিন ডি এবং পিত্ত রস তৈরি করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে কোলেস্টেরল দুই প্রকার থাকে। এইচডিএল , এলডিএল এবং গ্লিসারাইড কোলেস্টেরল।
এলডিএলের মাত্রা বৃদ্ধি বেড়ে গেলে ধমনীর মধ্যে চর্বি জমে যা হৃদযন্ত্রে রক্ত প্রবাহর বাধা সৃষ্টি করে। এইবার আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন, এই কোলেস্টেরলের মাত্রা কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
আসছি সেই বিষয়ে, ফাইবার খাওয়া বাড়িয়ে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া কমিয়ে, উদ্ভিদ ভিত্তিক খাবার যোগ করে, কম পরিশোধিত খাবার খাওয়া, প্রচুর পরিমানে ফ্লুইডস এবং খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট কমানোর মাধ্যমে। শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকলে একজন মানুষ দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবন কাটাতে পারবে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
৮ টি পানীয় যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে তা জেনে নিন
১. গ্রিন টি
গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস। গ্রিন টিতে রয়েছে ক্যাটেচিনস এবং এপিগালোকেটিচিন গ্যালেটস। গ্রিন টি পান করলে এলডিএল এবং মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
২. টমেটো রস
টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন রয়েছে যা একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। টমেটো কোষের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ২ মাসের জন্য প্রতিদিন ২৮০ মিলিলিটার টমেটোর রস পান করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে।
৩. সয়া দুধ
সয়া দুধে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাসোসিয়েশান (এফডিএ) ডায়েটের অংশ হিসাবে প্রতিদিন স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমিয়ে তার পরিবর্তে ২৫ গ্রাম সয়া প্রোটিনযুক্ত ডায়েটের সুপারিশ করেন।
আরও পড়ুন: নানা বিতর্ক ও জট কাটিয়ে পুলিশের জালে জড়াল অভিনেত্রী লীনা মারিয়া পল
৪. ওটস ড্রিঙ্ক
ওট দুধ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খুবই কার্যকরী। এতে রয়েছে বিটা-গ্লুকান নামক পদার্থ যা পিত্ত লবণের সঙ্গে মিশে যায় এবং অন্ত্রের মধ্যে একটি দেওয়ালের মত স্তর তৈরি করে যা কোলেস্টেরলের শোষণ কমাতে সাহায্য করে।
৫. বেরি স্মুদি
বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি, ব্লুবেরি এবং ব্ল্যাকবেরির মতো অনেক বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবারে ভরপুর থাকে। প্রতিদিন লো-ফ্যাট দুধের সঙ্গে এক মুঠো বেরি কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
৬. কোকো ড্রিঙ্ক
কোকোতে রয়েছে ফ্ল্যাভানল নামক একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ডার্ক চকোলেটের মধ্যে প্রধান উপাদান হল কোকো, যার মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রার মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সাহায্য করে। সাধারণত, প্রতিদিন ৪৫০ মিলিগ্রাম কোকো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। প্রক্রিয়াকৃত চকলেটগুলি খাওয়া বন্ধ করা উচিত কারণ তাতে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।
৬. রেড ওয়াইন
পরিমিত মদ্যপান রক্তে এইচডিএলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। রেড ওয়াইন পছন্দের অ্যালকোহল হতে পারে কারণ এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে রেড ওয়াইনের পরিমিত ব্যবহার কেবল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় না বরং কিছু হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ভারী মদ্যপান বিপরীত হতে পারে কারণ এটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৭. উদ্ভিদজাত খাদ্যসামগ্রী
কেলি, কুমড়া, তরমুজ এবং কলা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৮. স্ট্যানল এবং স্টেরলযুক্ত পানীয়
স্টেরল এবং স্ট্যানল হল উদ্ভিদ রাসায়নিক যা কোলেস্টেরলের আকার এবং আকারের অনুরূপ যা খারাপ কোলেস্টেরলকে বাধা দেয়। খাদ্য সংস্থাগুলি এই রাসায়নিকগুলি বিভিন্ন খাবার এবং পানীয়তে যুক্ত করে। এফডিএ জানিয়েছে যে প্রতিদিন ১.৩ গ্রাম স্টেরল এবং ৩.৪ গ্রাম স্ট্যানল কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
সবশেষে যে পানীয়র বিষয় না বললেই নয় সেটি হল জল। প্রতিদিন ৩ লিটার জল শরীরের ডিটক্সিফিকেশন করতে সাহায্য করে এবং অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।