বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: ভূতে ভয় পান? আচ্ছা পুরোপুরি ভয়ের দরকার নেই। একটু গা ছমছম? নিশ্চয়ই করে! সেভাবে কোনও সমীক্ষা করা হয়েছে কিনা জানা নেই। কিন্তু এ কথা জোর দিয়েই বলা চলে যে উপমহাদেশের শতকরা ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ লোকই অল্পবিস্তর ভূতে বিশ্বাস করেন।
আরও পড়ুন: ফুল বিয়েতে লাগে আবার শবযাত্রাতেও কিন্তু বদলে যায় গন্ধ, কারণ ভেবে দেখেছেন কখনও
একবিংশ শতাব্দীর ২১টা বসন্ত পার হয়ে গেলে কী হবে? কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভারতবর্ষের প্রকৃত চিত্রটা আজও রয়ে গিয়েছে একইরকম। আর এখানেই আমাদের এসে পড়ছে আমাদের মূল বিবেচ্য বিষয়। মানুষ কী সত্যি সত্যিই ভূতে বিশ্বাস করে বা ভয় পায়? নাকী ভূত নয়, মানুষের আসল ভয় অন্য জায়গায়? সেখান থেকেই ভূতের ভয়ের উদ্রেক।
‘Big Bang Theory’ -র কথা আমাদের কারওরই অজানা নয়। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, এই মহাজগতের সমস্ত আলোর উৎপত্তি হয়েছে কালো অর্থাৎ অন্ধকার থেকেই। বলা হয়, অন্ধকার থেকেই আলোর শুরু, আবার এই অন্ধকারেই শেষ। ভূত বাস্তবে থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে। কিন্তু মানুষ ভূতকে নয়, আসলে ভয় পায় এই অন্ধকারকেই।
কারণ অন্ধকারে না দেখা যায় সামনে, না পিছনে। না-ই দু’পাশে। ফলে বিপদ যে কোনও দিক থেকেই আসতে পারে। কোথায় কোন বিপদ ওত পেতে বসে রয়েছে, না দেখতে পেলে আমরা জানব কী করে? আর ভূতে ভয়ের ধারণাটি সেখান থেকেই এসেছে।
এমনিতেই মানুষ মৃত্যুর রহস্য নিয়ে আজও ধোঁয়াশায়। শেষ নিঃশ্বাস ফেলার পর কী হবে, তা কেউ জানে না। অন্ধকারের সঙ্গে ভূতপ্রেত বা অপদেবতাদের সম্বন্ধ এখানেই। অন্ধকারে কী কোথায় রয়েছে, তা যেমন আমরা ধারণা করতে পারিনা। তেমনিই ধারণার উর্ধ্বে মৃত্যু পরবর্তী অধ্যায়। স্বাভাবিকভাবেই মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় অন্ধকার এবং অপশক্তি।
আরও পড়ুন: Merry Christmas: আমরা যাঁকে চিনি, যীশু কী তিনিই
আসলে ভয়টা ওই অন্ধকারকে নিয়েই। আসলে আমরা ভুলেই যাই, এই জগতের সকল কিছু, এমনকী আমাদেরও উৎপত্তি অন্ধকার থেকেই। আবার কোনও একদিন ওই অন্ধকারেই হারিয়ে যাব। যদিও এত কথা হয়ত নিছকই তাত্ত্বিক। সত্যিটা আমাদের সামনে এলেও ভূতের ভয় চিরন্তন-ই থেকে যাবে। রক্তে মিশে গিয়েছে যে। ভূত— মানে তাদের কোনও শরীরই নেই। তারা কী করে মানুষের ক্ষতি করতে পারবে? এইভাবে ভাবতে আর ক’জনই বা পারেন?