কলকাতা: দেশের সকল বাঙালির অধিকার আদায়ের দাবিতে পথে নামতে প্রস্তুত বাংলাপক্ষ। এমন দাবি বারবার শোনা গিয়েছে বাঙালির জাতীয়তাবাদী সংগঠনের সদস্যদের মুখে। সেই প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে বিভিন্ন সময়ে পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও তাঁদের ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে। এবার ত্রিপুরার বাঙালিদের অধিকারের স্বার্থে কলকাতার ‘ত্রিপুরা ভবন’ অভিযান করল বাংলাপক্ষ।
ঘটনার সূত্রপাত, ত্রিপুরার কাঞ্চপুরের আনন্দবাজার এলাকায় বাঙালিদের উপরে ঘটে যাওয়া নির্যাতন নিয়ে। গত ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখে কাঞ্চনপুরের আনন্দবাজারে রিয়াং উপজাতি গোষ্ঠীর আক্রমণে গৃহহীন হয়ে যায় ৯৩টি পরিবার। প্রায় ৫০০ বাঙালিকে আশ্রয় নিতে হয় উদ্বাস্তু শিবিরে। তাঁদের বাড়িঘরের পাশাপাশি দোকানেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই শীতের প্রায় মাস দুয়েক ধরে গৃহহীন অবস্থায় দিন কাটছে ওই সকল বাঙালিদের।
ত্রিপুরার বাঙালিদের এই দূরাবস্থার জন্য ওই রাজ্যের শাসকদল বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছে বাংলাপক্ষ। সেই সঙ্গে মহারাজা প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মার বাঙালি বিদ্বেষী মনোভাবকেও দায়ি করা হয়েছে। কারণ তিনি রাজবাড়ির সামনে বাঙালির মহানায়ক ক্ষুদিরাম বসু ও সূর্য সেনের মূর্তি বসানোর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। আগরতলা বিমান বন্দরের নাম যাতে সুভাষ চন্দ্র বসুর নামে না হয় সে ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন বাঙালির মহানায়কদের ত্রিপুরায় অবদান নিয়ে৷।
এই সকল বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ জানাতেই কলকাতার ত্রিপুরা ভবনে অভিযান করে বাংলাপক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী বিল্পব দেব-কে উদ্দেশ্য করে ত্রিপুরা ভবনে দেওয়া হয়েছে ডেপুটেশন। শনিবার বিকেলের দিকে বাংলাপক্ষের সহযোদ্ধাদের প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা গিয়েছে ত্রিপুরা ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষভ প্রদর্শন করতে। ত্রিপুরা থেকে অনেকেই কলকাতায় আসেন চিকিৎসার জন্য। তাঁরা ওই ত্রিপুরা ভবনেই থাকেন। সেই সকল অসুস্থ মানুষদের যাতে কোনও প্রকারের সমস্যা না হয় সেই কারণে জোরে স্লোগান দেওয়া থেকে বিরত ছিল বাংলাপক্ষের সহযোদ্ধারা।
এই কর্মসূচির বিষয়ে বাংলাপক্ষের নেতা কৌশিক মাইতি বলেছেন, “বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরায় রিয়াং-রা এসে বাঙালিকে মারছে। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বলা হচ্ছে বাংলাদেশি। দু’মাস ধরে এতগুলো বাঙালি বাড়ি ছাড়া হয়ে রয়েছে। অথচ গত মাসেই রিয়াং-দের জন্য কেন্দ্র বিশেষ প্যাকেজ ঘষণা করেছে। আমরা গৃহহীন বাঙালিদের পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে বাঙালি বিদ্বেষী প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।” এই একই ইস্যুতে ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরের দাসদা এলাকায় বিরাট প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানেও বাংলাপক্ষের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন।