কলকাতা: কলকাতার খোলা বাজারে বিকোচ্ছে বিরল প্রজাতির হরিণের লোম দিয়ে তৈরি শাল৷ যার পোশাকি নাম, শাহতোষ শাল৷ গোপন সূত্রে আসা খবরের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে রহস্যের কিনারা করল ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল সেল এবং ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সদস্যরা৷ হাতে নামে ২৭টি শাহতোষ শাল সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা৷ শহরের আর কোথায় কোথায় এই শাল রয়েছে, চক্রের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত তার খোঁজে তল্লাশি অভিযানে নেমেছেন তদন্তকারীরা৷
সূত্র মারফত বনবিভাগের এই দুই অপরাধ দমন শাখার কাছে তথ্য আসে যে কলকাতার বড়বাজার এলাকায় কয়েকজন শীতবস্ত্র বিক্রেতা বেআইনি কিছু শীতবস্ত্র বিক্রি করছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আজ বড়বাজার এলাকায় যৌথ অভিযান চালায় এই দুই সংস্থা। সেখান থেকে ৩০০টির উপর শীতবস্ত্র(শাল) উদ্ধার করে বনবিভাগ। সেই বস্ত্রের মধ্যে ২৭টির মতো এখনও পর্যন্ত শাহতোষ শাল বলে চিহ্নিত করেছে বলে বনবিভাগ সূত্রে খবর। এই ঘটনায় আবদুল সামাদ শাহ, আসিফ আহমেদ, সুদর্শন কুস্বাহা নামের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা প্রত্যেকেই ভিন রাজ্য থেকে এসে কলকাতায় শীতবস্ত্র বিক্রি করতো বলে সূত্রের খবর।
বনবিভাগ সূত্রে খবর, এই শীত বস্ত্র মূলত টিবেটিয়ান অন্টিলোপ ওরফে চিরু হরিণের লোম থেকে তৈরি হয়। বিলুপ্ত এই প্রাণীটি প্রথমে মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে দেখা মিললেও পরে সেটিকে তিব্বতে দেখা পাওয়া যায়। তবে তার সংখ্যা দিনে দিনে লুপ্ত হওয়ায় এই প্রাণীটিকে বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এবং তার লোম দিয়ে তৈরি শীতবস্ত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই প্রাণীর লোম নরম হওয়ায় সেটা দিয়ে তৈরি শীতবস্ত্র খুবই হালকা এবং মসৃণ তৈরি হত।
ফলে এর বাজার মূল্য ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। তবে এই শাহতোষ শাল নিষিদ্ধ হয়ে গেলেও কাশ্মীরের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই শালকে কলকাতা সহ বিভিন্ন রাজ্যে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে বহু পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে। এই তিন অভিযুক্ত একই পদ্ধতিতে এই শালগুলিকে কলকাতার বাজারে বিক্রি করছিল বলে বনবিভাগের দাবি। অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাদের থেকে উদ্ধার হওয়া বাকি শালের মধ্যে শাহতোষ শাল আছে কিনা তদন্ত করে দেখছে ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল সেল এবং ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে পার্থ বললেন, অভিষেককে নিয়ে দলে কোনও বিতর্ক নেই