কলকাতা: বিতর্ক যেন কিছুতেই থামছে না শাসকদল তৃণমূলে৷ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) মন্তব্যকে ঘিরে প্রকাশ্যে তৈরি হওয়া অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে সকলকে মন্তব্য থেকে নীরব থাকার হুইপ জারি করেছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তবু রবির ছুটিতে সোশ্যাল সাইটে এবিষয়ে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের ‘কালারফুল বয়’ মদন মিত্রকে৷
এবার সেই ‘বিদ্রোহী’ মদন ও কল্যাণের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ টেনে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ৷ টিপ্পনির সুরে বললেন, ‘‘এটা ভাল, যে একা মন কি বাত হত মোদীজির, এবার অনেকের মন কি বাত শোনার সুযোগ হচ্ছে!’’ দাবি করেছেন, ‘‘টিএমসিতে পাওয়ার সেন্টারটা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে! নেত্রীর গ্রিপ সরকার এবং পার্টিতে কমে যাচ্ছে। তাই কোন জায়গায় পুজোটা দেবেন, সেটা অনেকে বুঝে উঠতে পারছেন না। তাই এই প্রবলেমটা হচ্ছে৷’’
যা শুনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, নিজেদের ঘরে বিদ্রোহ চলতে থাকলেও পরিস্থিতি বুঝে শাসকের লোফা ক্যাচ হাতছাড়া করতে নারাজ দিলীপ৷ তৃণমূলের ঘোলাজলকে আরও ঘুলিয়ে দিতে তাই আসরে নেমে পড়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি৷
প্রসঙ্গত, রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মদন মিত্র বলেছেন, ‘‘দলের সভায় গিয়ে অভিযোগ জানাবেন। তৃণমূল ভবনে গেলে শুধু সুব্রত বক্সীকে পাওয়া যায়৷ আর কাউকে পাওয়া যায় না।’’ এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ কার্যত মদনের বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, ‘‘মদনদা অনেকদিন পরে মনের কথা বলেছেন। পুরানো পলিটিশিয়ান, অনেক উত্থান পতন দেখেছেন, অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তাঁর মনের কথা বলার সুযোগ ছিল বলার জায়গা চাই। উনি যার নাম বললেন সুব্রত বক্সীকে বলে কোনো লাভ নেই। ওনার সামনে বলা আর গাছের সামনে বলা একই কথা।’’
দাবি করেছেন, ‘‘কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেটা বললেন আসলে সেটা দলের অনেকের মনের কথা।’’ ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘যেভাবে ডায়মন্ড হারবার থেকে সৌমেনবাবুকে সরিয়ে এক ভাইপোকে এমপি করা হল, পরের ইলেকশনে হয়তো একই জিনিস শ্রীরামপুরে দেখা যাবে। আর সেই জোর কা ধাক্কা ধীরে সে লাগে, সেটা কল্যাণদা বুঝতে পেরেছেন৷ তাই প্রথম থেকে তিনি সিগন্যাল দিচ্ছেন।’’
মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আজকের গোয়া সফর নিয়েও, ‘‘শীতের সময় গোয়া সফরটা খুব ভালই লাগে। সুন্দর পরিবেশ থাকে। দেশ বিদেশি লোক থাকে। অনেকবার যাওয়ার চেষ্টা করছেন গিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না। জানি না কেউ আছে কি না ওনাকে রিসিভ করার জন্য।’’
মুখ খুলেছেন ট্যাবল বিতর্ক নিয়েও৷ ‘‘প্রত্যেকটা বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করা ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্মেন্টের একটা ফ্যাশন। আসলে মানুষকে আসল সমস্যা থেকে সরিয়ে দিয়ে মনকে বিভ্রান্ত করার ফ্যাশন। ট্যাবল কি হবে না হবে ওখানে একটা কমিটি আছে, দিল্লিতে তারা ঠিক করে তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে প্রথম থেকে ইনফরমেশন দিয়ে করা উচিত। ওনারা বিতর্ক চান, কাজ চান না। তাই এসব করছে৷’’
আরও পড়ুন: করোনা নয়, ভোট পিছিয়ে যাওয়ার পিছনে ‘অন্য’ অঙ্ক দেখছে জনতা