কলকাতা: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। দেশ জুড়ে জারি রয়েছে আন্দোলন। সেই সঙ্গে দোসর হিসেবে রয়েছে রাজনৈতিক এতাদের আক্রমণ এবং প্রতি-আক্রমণ। এই অবস্থায় সোমবার এক দলীয় সভায় দাঁড়িয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন কেন্দ্রের শাসক বিজেপিকে। সাফ জানিয়ে দিলেন যে দেশের কেউ চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক নয়, সকলেই নাগরিক।
এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ছাত্র-যুব কর্মশালায় হাজির ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের সাধারণ মানূষকে বোঝাতে হবে। মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে বিজেপি। আমরা কেউ চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক নই। কিন্তু আমরা সকলেই নাগরিক।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “বিজেপি ঠিক করে দেবে যে কে কী খাবে বা কে কোন ধর্ম পালন করবে? বিজেপি ঠিক করে দেবে যে কে চিঁড়ে খাবে?”
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় একটি মন্তব্য ঘিরে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে আয়োজিত এক দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান যে খাওয়া দেখে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করা যায় এবং তিনি নিজে তা করেছেন। কারণ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা চিঁড়ে খায়। এই বিষয়টি তিনি বুঝতে পেরেছেন নিজের বাড়ি মেরামতের কাজ করাতে গিয়ে।
বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন যে তাঁর বাড়তে কয়েকদিন আগে কিছু রাজমিস্ত্রী কাজ করেছিল। যাদের খাদ্যাভ্যাস দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। কারণ সেই মিস্ত্রীরা চিঁড়ে খাচ্ছিল। সন্দেহ জাগায় ঠিকাদারের থেকে ওই সকল মিস্ত্রীদের বিষয়ে খোঁজখবর করেন বিজেপি নেতা কৈলাস। তখনই তিনি জানতে পারেন যে ওই সকল মিস্ত্রিরা বাংলাদেশের নাগরিক। এর দিন দুই পরে কাজ বন্ধ করে দেয় ওই রাজমিস্ত্রীরা। বিজয়বর্গীয় নিশ্চিত যে ওই সকল মিস্ত্রী আসলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী।
সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হতেই বিতর্কের ঝড় ওঠে। সমালোচনা শুরু হয় বিজেপি নেতাকে ঘিরে। কারণ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছেও চিঁড়ে খুবই জনপ্রিয় খাবার। বভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানেও চিঁড়ে ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। এদিন কেন্দ্রের শাসক বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বিজেপি কী হাওয়া খেয়ে বড় হয়েছে? আমি কখনও শুনিনি যে কোনও মানুষকে পোশাক বা খাদ্যাভ্যাস দেখা হয়। এই সকল বিষয় কিছুতেই বরদাস্ত করা যাবে না।”