কলকাতা: আজ পঞ্চম দিনে পড়েছে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ডাক্তারদের আন্দোলন। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আজ ফের রাত দখলের ডাক দিয়েছেন। ৫ দফা দাবি না মেটা পর্যন্ত এrg ই আন্দোলন চলবে বলেই জানাচ্ছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। নিম্নচাপের জেরে শুক্রবার থেকেই ভাসছে কলকাতা। এই আবহেই শনিবার হঠাৎ করেই স্বাস্থ্যভবনের সামনে পৌঁছে যান। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রী নই, দিদি হিসেবে বলতে এসেছি।” আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “আপনারা কাজে যোগ দিন। আমি আপনাদের দাবিগুলো দেখব।”
স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আমি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলব। আমাকে একটু সময় দিন। আপনাদের প্রতি আমি কোনও অবিচার করব না। কাজে ফিরুন। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। আমি সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতিতে অধ্যক্ষদের চেয়ারম্যান করব। জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স ও পুলিশ থাকবে তাতে। আরজি কর সহ সব কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দিলাম।” এখনেই শেষ নয় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি আপনাদের আন্দোলনকে সমর্থন করি। আমি আপনাদের আন্দোলনকে কুর্নিশ জানাই। আমি ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে আসা লোক। আমি জানি আমার পদটা বড় কথা নয়। কাল সারারাত ঝড়-জল হয়েছে, আপনাদের যেমন কষ্ট হয়েছে। আমারও কষ্ট হয়েছে। এই ঝড়জলের মধ্যে আপনারা যেভাবে বসে আছেন আমারও কষ্ট হয়েছে। ৩৩-৩৪ দিন আমিও রাতের পর রাত ঘুমোইনি, আপনারা যখন রাস্তায় থাকেন আমাকেও পাহারাদার হিসেবে জেগে থাকতে হয়।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আপনারা অনেক কষ্ট পেয়েছেন। আর কষ্ট না করে যদি আপনারা কাজে ফিরতে চান, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আপনাদের দাবিগুলো সহানুভূতির সঙ্গে খতিয়ে দেখব। ভাবব, চিন্তা করব। যদি কেউ দোষী হয়, সে শাস্তি পাবেই। আমি চাই তিলোত্তমার বিচার হোক।” এর পরেই ফের একবার চিকিৎসকদের কাজ ফেরার আবেদন করেন। বলেন, “ডাক্তারদের কাছে আবেদন জানাব, আমাকে একটু সময় দিন। যদি আপনাদের আমার উপর আস্থা, ভরসা থাকে। আমি মনে করি অনেক মানুষও মারা যাচ্ছে, দয়া করে কাজে যোগদান করুন। আমি বলতে পারি, আপনাদের উপর কোনও অবিচার করব না। হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শুরু করে দিয়েছি। রোগীকল্যাণ সমিতিতে অধ্যক্ষদের চেয়ারম্যান করব। তাতে জুনিয়র ডাক্তার, নার্স, পুলিশও থাকবে। সব মেডিক্যাল কলেজে রোগীকল্যাণ সমিতি ভেঙে দিলাম। আপনাদের বাকি যা দাবি আছে, তা ভাবা হবে। দোষীরা কেউ আমার বন্ধু নয়। যাঁরা ভাবছেন, তারা আমার বন্ধু। আমি তাদের চিনিই না। কোনওভাবে এই খুন, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে সাধ্যমতো ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব। আপনারা আমার ভাইবোন। নিজেদের মধ্যে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন, কোনও ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নেব না।” মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই সঙ্গেই তাঁরা বলেছেন, “পাঁচ দফা নিয়ে আমরা কোনও রকম সমঝোতায় যেতা চাই না। দাবি নিয়ে অতি দ্রুত আলোচনায় বসতে চাই।”