
কলকাতা: বেনামি আবেদন মামলায় শিক্ষা দফতরের মুখ্যসচিব মণীশ জৈন শুক্রবারই হাজির হন আদালতে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে তিনি দাবি তুলে জানিয়েছেন, এই শূন্যপদ তৈরি করার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল মন্ত্রিসভার বৈঠকেই। তিনি আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হত। আর এই শূন্যপদ তৈরি করা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নির্দেশেই’। এই সওয়াল জবাবের মধ্যে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এদিন বিস্ফোরক মন্তব্য করে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন। তৃণমূলের প্রতীক প্রত্যাহার করার কথা নির্বাচন কমিশনকে(Election Commission) বলবেন, এমনই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ নাকি নয়া সমীকরণ, মমতা শুভেন্দুর সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
বেআইনি নিয়োগ মামলা নিয়ে বারবার ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন এজলাসে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘রাজ্য কেন বেআইনিভাবে নিযুক্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে? গণতন্ত্র কি আদৌ সঠিক লোকের হাতে?’ এই মর্মে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। এমনকি তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘বেআইনি নিযুক্তদের জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ কেন?’ এর জবাব দিতে গিয়েই বিস্ফোরক দাবি করেন মণীশ জৈন। তিনি দাবি করেছেন, অবৈধ উপায়ে চাকরি প্রাপ্তদের চাকরি যাবে না, প্রয়োজনে নতুন করে শূন্যপদ তৈরি করে তাঁদের চাকরি বহাল রাখা হবে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল মন্ত্রিসভার বৈঠকেই।
তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের নোট দেখতে চান। অবৈধ এই চাকরি বাঁচানোর জন্য কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা তা দেখতে চান বিচারপতি। এমনকি এই সওয়াল জবাব চলাকালীন বিচারপতি জানিয়েছেন, ‘আমি ক্যাবিনেটকে পার্টি করে দিতে পারি। সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে। আমি কিছু প্রশ্ন করতে পারি। ক্যাবিনেট সদস্যদের শোকজ করতে পারি’। তিনি আরও বলেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর যন্ত্রণা বুঝতে পারি। তাঁকে অনেক কিছু সামাল দিতে হয়। কিন্তু কিছু দালাল মুখপাত্র, তাঁদের স্বার্থ বুঝি না’। বিচারপতি এদিন বলেন, ‘আমার সন্দেহ হয় গণতন্ত্র সঠিক হাতে নেই আর নাহলে গণতন্ত্র বিকশিতই হয়নি। আমি ক্যাবিনেটকে পার্টি করে দেব। সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে’। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে(Election Commission) বলব তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক প্রত্যাহার করার জন্য, দল হিসেবে তাঁদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায় না’।
প্রসঙ্গত, SSC-তে অতিরিক্ত শূন্যপদে বেনামি-আবেদনের কৈফিয়ত চেয়ে শিক্ষাসচিবকে মণীশ জৈনকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মূলত, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিলেন, কার নির্দেশে অযোগ্য শিক্ষকদের হয়ে আদালতে দরবার করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। আর এই সবকিছুর জবাব দিতেই এর আগে বৃহস্পতিবার সকালেই রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের মুখ্য সচিব মণীশ জৈন হাইকোর্টে এসে পৌঁছান তিনি।